জলপাইগুড়ি: চেয়েছিলেন পুতুল কিনতে। তার জন্য যে ঘটি বাটি বেচতে হবে ভাবতে পারেননি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। সেক্স টয় কিনতে গিয়ে প্রতারণার জালে পড়েন তিনি। আর তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হলেন এক ড্যান্স বারের মালিক। শনিবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) রাজগঞ্জে।
জানা গিয়েছে, রাজগঞ্জ থানার অন্তর্গত বেলাকপবা এলাকার এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে বিভিন্নরকম ভাবে প্রলোভন দেখিয়ে দফায় দফায় ৩৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক। কীভাবে ও কেন টাকা নেওয়া তাঁর কাছ থেকে?
জানা গিয়েছে, ওই প্রাক্তন শিক্ষক সেক্স টয় কিনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কয়েক দফায় তাঁর কাছ থেকে মোট ৩৭ লাখ টাকা নেওয়া হলেও সেক্স ডল পাননি। এর পর ‘পুতুল’ না পেয়ে থানায় অভিযোগ করেন তিনি। ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এর পর পবন দাস নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে রাজগঞ্জ থানার পুলিশ। তিনি জলপাইগুড়ি জেলার একটি ডান্স বারের মালিক বলে খবর। অভিযুক্তকে নিয়ে আসা হয় জলপাইগুড়ি আদালতে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২০ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিলিগুড়ির হংকং মার্কেটের একটি দোকানে সেক্স টয় কিনতে যান। দোকানদার তাকে জানান পুতুলটির অনেক দাম। বিদেশ থেকে আনাতে হবে। তিনি যদি অগ্রিম ১ লক্ষ টাকা দেন তবে তাঁরা পুতুলটি বিদেশ থেকে আনবেন। পত্রপাঠ রাজি হয়ে যান ওই প্রাক্তন শিক্ষক। তিনি অগ্রিম টাকাও দেন।
এর পর শুরু হয় প্রতারনার ফাঁদ পাতার কাজ। শিক্ষককে জানানো হয় পুতুলটি তার বাড়িতে ডেলিভারি দিতে যাওয়ার সময় রাস্তায় পুলিশ ধরে ফেলে লাইনম্যানকে। পুলিশের জেরার মুখে লাইনম্যান শিক্ষকের নাম বলে ফেলেছে। এবার পুলিশকে টাকা দিতে হবে। নইলে পুলিশ শিক্ষককে গ্রেফতার করবে। এই টোপ থেকে শুরু হয় প্রতারণা। এর পর দফায় দফায় ৩৭ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়। টাকা মেটাতে জমি পর্যন্ত বিক্রি করেন ওই প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক। কিন্তু আর টাকা দিতে না পেরে রাজগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।
ঘটনায় জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, “একটি বিশেষ ধরনের পুতুল কিনতে গিয়ে এক অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে ৩৭ লক্ষ টাকা খুইয়েছেন। এই মর্মে তিনি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তদন্ত করে পবন দাস নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলা হয়েছে”। এদিকে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে পবন দাস বলেন, ‘আমি কিছুই জানি না। আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যাবহার করা হয়েছে। যেখানে ৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে’। শেষে আদালত অবশ্য তাঁকে পাঁচদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে এলাকায়।