শটগানের গুলিতে মৃত্যু উলানের! পুলিস গুলি চালিয়েছে, দাবি বিজেপির, তদন্তভার CID-কে
তদন্তভার দেওয়া হয়েছে সিআইডিকে।
কলকাতা: পুলিসের গুলিতে নয়, পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কারও শটগানের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে শিলিগুড়ির বিজেপি কর্মীর। মঙ্গলবার টুইট করে জানাল রাজ্য পুলিস। টুইটে বলা হয়েছে, ময়না তদন্তে দেখা গিয়েছে, শটগানের গুলিতে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এই ধরনের বন্দুক পুলিস ব্যবহার করে না। ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে সিআইডিকে। যদিও এই ময়না তদন্তের রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিজেপি। কেন তড়িঘড়ি ময়না তদন্ত করা হল তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিজেপির কার্যকর্তা সায়ন্তন বসু।
সায়ন্তন বসু এদিন বলেন, “প্রথম কথা হল রাতের অন্ধকারে পোস্ট মর্টেম হয়েছে। আমার কাছে খবর এসেছে ওঁর পরিবারের লোকজনকে রাতে পুলিস তুলে নিয়ে যায়। এফআইআরে লিখতে বলে, দুষ্কৃতীদের ছোড়া গুলিতে নিহত হয়েছেন। কিন্তু উলেন রায় সকলের সামনে গুলিবিদ্ধ হন। প্রায় ১ হাজার মানুষ দেখেছেন পুলিসই গুলিটা চালিয়েছিল। পরিবারের লোকজন সংবাদমাধ্যমের সামনে স্পষ্ট বলেছে পুলিসের গুলিতেই এই মৃত্যু। ”
As per the PM report “death was due to the effects of shotgun injuries.” Police do not use shotguns. It’s obvious that during yesterday’s protest in Siliguri, armed persons were brought and they fired from firearms. (1/3)
— West Bengal Police (@WBPolice) December 8, 2020
The deceased received pallet injuries from a shotgun fired from close range by a person standing near the deceased in the protest program. This is unprecedented. Bringing armed persons in protest programs and inciting them to fire is unheard off. (2/3)
— West Bengal Police (@WBPolice) December 8, 2020
সায়ন্তন বলেন, কেন তড়িঘড়ি ময়না তদন্ত করা হল তা নিয়ে দলের সংশয় রয়েছে। একইসঙ্গে বাড়ির লোককে তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও সন্দেহের। তাঁর কথায়, “আমরা আজ বসছি। কাগজপত্র জোগাড় হচ্ছে। আরেকটা পোস্ট মর্টেম যদি করা সম্ভব হয় হবে। আমরা কোর্টে যাব। এই আন্দোলনকে তীব্র রূপ দেব।”
রাতারাতি উলেন রায়ের দেহের ময়না তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকও। তাঁর দাবি, বেছে বেছে বিজেপি কর্মীদের খুন করা হচ্ছে। সোমবার বিজেপির শান্তিপূর্ণ উত্তরকন্যা অভিযানে পুলিসের নৃশংসতা সে কথাই আরও একবার বুঝিয়ে দিল। নিশীথেরও দাবি, “আমাদের কর্মীর প্রাণহানি হল। রাতের অন্ধকারে মৃতদেহ ময়না তদন্ত করা হল। মৃতের পরিবারের লোকজনের উপর চাপ সৃষ্টি করা হল। মুচলেকা দিতে হল পরিবারকে। এর আগেও হেমতাবাদের ঘটনায় পুলিসের ভূমিকা দেখেছি। পুলিস প্রশাসন সম্পূর্ণভাবে দলদাসে পরিণত হয়েছে। দল পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করেছে।”
এদিন রাজ্য পুলিসের তরফে টুইট করে জানানো হয়, অশান্তি তৈরি করতেই মিছিলে গুলি চালানো হয়। সিআইডি তদন্ত শুরু করেছে। সত্যি সামনে আসবেই। দোষীরাও কড়া শাস্তি পাবে। টুইটে লেখা হয়, “তদন্তে দেখা গিয়েছে শটগানের গুলিতেই এই মৃত্যু। যে গুলি চালিয়েছে সে ওই ব্যক্তির খুব কাছেই ছিল। ময়না তদন্তের রিপোর্টেও শটগানের গুলিতে জখমের জেরেই মৃত্যর উল্লেখ আছে। কিন্তু পুলিস শটগান ব্যবহার করে না। এ থেকে স্পষ্ট শিলিগুড়িতে গতকাল মিছিলেই কেউ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ছিল। সেখান থেকেই এই ঘটনা।”
There was a malafide intention to create violence by the use of firearms. CID West Bengal has been asked to investigate. Truth will come out and strong action will be taken against all those who planned and executed the heinous crime. (3/3) pic.twitter.com/8UNdfDoVDH
— West Bengal Police (@WBPolice) December 8, 2020
সোমবার বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় শিলিগুড়ি। পুলিসের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস, স্থানীয় বাড়ি থেকে লুকিয়ে বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে। এই মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান উলেন রায় নামে এক বিজেপি কর্মী। এরপরই দলের তরফে অভিযোগ তোলা হয়, পুলিসের গুলিতে তাঁদের কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। রাতেই দেহের ময়না তদন্ত হয়। এদিন রাজ্য পুলিস টুইটে জানিয়েছে, মিছিল থেকেই কেউ গুলিটি ছোড়ে। তাতেই জখম হয়ে এই প্রাণহানি। যদিও বিজেপির তরফে বড়সড় আন্দোলনে নামার হুমকি দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ১২ ঘণ্টার উত্তরবঙ্গ বনধেরও ডাক দিয়েছেন দিলীপ ঘোষরা।