
জলপাইগুড়ি: কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে-র প্রবাদ সবাই জানেন। কিন্তু সাপ খুঁজতে গিয়ে দুর্নীতি ফাঁস? হ্যাঁ, সাপ ধরতে গিয়ে এক ব্যক্তির সৌজন্যে ফাঁস হল রেশন দুর্নীতি! গোটা ঘটনায় হইহই পড়ে গিয়েছে এলাকায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সেই ছবি।
সাপ ধরতে গিয়ে রেশন দুর্নীতি ধরে ফেললেন এক সেচ্ছাসেবী। দুয়ারে রেশন ক্যাম্পের রেশন সামগ্রী সেই ক্যাম্পে এসেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন রেশন ডিলার। গৃহস্থের বাড়ি থেকে সাপ উদ্ধার করতে গিয়ে ফাঁস করলেন সেই দুর্নীতি-র দৃশ্য। নিজের মোবাই ল ফোনে পুরো ঘটনা ক্যামেরাবন্দি করে ছড়িয়ে দিলেন সোশ্যাল মিডিয়া। কিছুক্ষণের মধ্যে সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। আর তা নিয়ে তুমুল হইইচই শুরু হয়েছে জলপাইগুড়ির রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে।
সেই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে রেশন সামগ্রী না দিয়ে টাকা দিচ্ছেন এক রেশন ডিলার। অপর দিকে রেশন নিয়ে যাওয়ার পথে সেই সামগ্রী স্থানীয় দালালদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন উপভোক্তারা। ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, দুয়ারে রেশন প্রকল্পের চাল-ডাল বিলির জন্য একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেখানে লাইন দিয়ে রয়েছেন মানুষ। আর তার মধ্যেই দেখা যাচ্ছে রেশনের বদলে এক জনের হাতে টাকা তুলে দেওয়া হচ্ছে। তিনি থুতু দিয়ে সেই টাকা গুনছেন। তখন পাশে দাঁড়িয়ে অনেকেই। তবে কোনও লুকোছুপির ধার ধারছে না না ওই দু’ জন।
‘খাদ্য সাগগ্রীর বদলে টাকা নিচ্ছেন, এটা কি ঠিক করছেন চন্দনবাবু?’ ক্যামেরাম্যান প্রশ্ন করতেই জনৈক চন্দনবাবুর জবাব, “আমি কোনও টাকা নিচ্ছি না।” তাঁর কাছে প্রমাণ রয়েছে জানালে স্বেচ্ছাসেবকের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে চলে যেতে দেখা যায় ওই ব্যক্তিকে।
এদিকে এহেন অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জলপাইগুড়ি বালা পাড়া এলাকায়। ঘটনার তদন্ত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানালেন খাদ্য দফতরের এক শীক্ষ আধিকারিক।
যে ভাবে সামনে এল এই ঘটনা:
বুধবার বেলার দিকে গ্রীন জলপাইগুড়ি নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অঙ্কুর দাসের কাছে খবর আসে বালাপাড়া এলাকায় একটি বাড়িতে বিষধর সাপ ঢুকেছে। খবর পেয়ে তিনি সেই সাপ ধরতে যান। গিয়ে দেখেন সাপ বেরিয়ে গেছে।এদিকে সেই সময় চলছিল দুয়ারে রেশনের ক্যাম্প। কথায় কথায়, স্থানীয় কয়েকজন মহিলা তাঁর কাছে অভিযোগ করেন দুয়ারে রেশন ক্যাম্পে রেশন সামগ্রী খুল্লমখুল্লা ভাবে বিক্রি হচ্ছে। অঙ্কুরবাবু সেখানে গিয়ে দেখেন অভিযোগ ঠিকই। এর পর তিনি পুরো ঘটনার ভিডিয়ো রেকর্ডিং করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেন। অপরদিকে তার বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রেশন ডিলার চন্দন সরকার।
ঘটনায় সহকারী খাদ্য নিয়ামক অজয় কুমার মিশ্র বলেন, “এই ধরনের একটি ভিডিও আমাদের নজরে এসেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করে দিয়েছি।” দফতরের নিয়ম অনুযায়ী যা ব্যবস্থা রয়েছে তা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।