জলপাইগুড়ি: ১০০ দিনের কাজের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জলপাইগুড়িতে বুধবার হাজির হয় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দস। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই সদস্যের একটি দল গত ১৭ জানুয়ারি জলপাইগুড়ি জেলায় এসে পৌঁছেছে। আগামী ২৩ তারিখ পর্যন্ত তারা জেলাতেই থাকবে। বিভিন্ন গ্রামপঞ্চায়েত এলাকা ঘুরে দেখবে তারা। সেখানার ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজের খতিয়ান তৈরি করবে। তবে কোন কোন গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় এই কেন্দ্রীয় দল যাবে তা তারা নিজেরাই ঠিক করবে। ইচ্ছামতোই এলাকা পরিদর্শন করবেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা।
বুধবার জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন গ্রামপঞ্চায়েত এলাকা ঘুরে দেখেন কেন্দ্রের দুই প্রতিনিধি। এরমধ্যে ছিল বোয়ালমারি, কচুয়া বোয়ালমারি, পাতকাটা, পাহারপুর, বন্ধ রায়পুর চা বাগান-সহ বিভিন্ন এলাকা। এই সমস্ত জায়গায় গিয়ে ১০০ দিনের কাজ নিয়ে নানা খোঁজ খবর নেন তাঁরা। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা গ্রামের মানুষ ও পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। খুঁটিনাটি বিভিন্ন বিষয় তাঁরা সাধারণ মানুষকে প্রশ্ন করেন বলেও জানা গিয়েছে। কম বেশি সকলের কাছেই জানতে চান, গ্রামের মানুষ ১০০ দিনের কাজ পেয়েছেন কি না। ১০০ দিনের কাজ নিয়ে কার কী অভিযোগ তাও শোনেন তাঁরা।
মণ্ডলঘাট সর্দারপাড়ার বাসিন্দা ঝরনারানি সরকার। ঝরনা বলেন, “কেন্দ্রের থেকে লোক এসেছিলেন। ১০০ দিনের কাজ নিয়ে খোঁজখবর করতে এসেছিলেন তাঁরা। আমাদের কিছু গাছ লাগানোর কথা ছিল। সুপারি আর পেয়ারা গাছের চারা পাওয়ার কথা আমাদের। কিন্তু আমাদের শুধুই পেয়ারা গাছের চারা দেওয়া হয়েছে। ৪০টার মতো চারা দেওয়ার কথা। তারও কম দেওয়া হয়েছে। সুপারির চারা তো দেওয়াই হয়নি। ২ লক্ষ টাকার মতো বৃক্ষরোপণের কাজ ছিল। কোনও টাকাই পাইনি। ২০২১ সালে পুজোর আগে একবার কাজ পেয়েছিলাম। সেই টাকাটা পাইনি। কেন্দ্রের লোকজন বললেন, আমাদের কাজের হিসাব নথিবদ্ধই হয়নি পাসবুকে। এই পাসবুকগুলো যারা কাজ করায় তাদের কাছেই থাকে। আমার মা কাজ করেছিল ২০ দিন। কিন্তু একটা টাকাও পায়নি।”
অন্যদিকে পাহারপুর তাঁতিপাড়ার বাসিন্দা রমেশ দেবনাথ বলেন, সরকারি টাকায় তৈরি বাড়ি তাঁর। সেই বাড়ি নিয়ে নানা প্রশ্ন করেন আধিকারিকরা। সঙ্গে বিডিও ছিলেন। রমেশ দেবনাথের কথায়, “ঘর তৈরি করতে ৪০-৫০ হাজার দিতে হয়েছে আমাকে। তাও বেড়া দিয়ে হয়েছে। পয়সার জন্য করতে পারিনি। ঘরের জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা মতো পেয়েছি। এদিন বিডিওর সঙ্গে আরও লোক ছিলেন। তাঁরা বাড়ির চারপাশ ঘুরে দেখলেন, ছবি তুললেন। আমার ছেলে অরবিন্দ দেবনাথও ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মতো পেয়েছে। নাতি কেরলে কাজ করে। টাকা পাঠিয়েছে, তা দিয়ে কাজ হয়েছে।”
প্রতিনিধি দলের এক সদস্য জানান, তাঁরা জেলার ১০০ দিনের কাজ সংক্রান্ত খোঁজ খবর নিতে এসেছেন। এই রিপোর্ট তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জমা দেবেন। কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের সামনে পেয়ে বিভিন্ন মানুষকে তাদের অভাব অভিযোগ নিয়ে বলতে শোনা যায় এদিন।
আরও পড়ুন: বিজেপির পার্টি অফিস দখলের চেষ্টা, বোমাবাজিতে উত্তপ্ত ময়না