
জলপাইগুড়ি: পুলিশ লক-আপেই প্রাণ গেল বিচারাধীন বন্দির। গোটা ঘটনা ঘিরে শোরগোল পড়ল জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি এলাকায়। গভীর রাতে থানার মধ্যে বাড়ল উত্তেজনা। কিন্তু বিচারাধীন বন্দির এহেন পরিণতি কীভাবে হল? সেই প্রশ্নই উড়ে বেড়াচ্ছে এলাকার অলিতে-গলিতে।
নিহত অভিযুক্তের নাম প্রসন্ন কুমার রায়। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল ধূপগুড়ি থানার পুলিশ। গত সপ্তাহের ঘটনা। ধূপগুড়ির সৎসঙ্গ পাড়ার বাসিন্দা প্রসন্ন রায়ের বিরুদ্ধে উঠল স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সেই রাতেই স্ত্রীকে প্রচন্ড মারধর করে প্রসন্ন। স্বামীর ‘অত্য়াচারে’ গুরুতর ভাবে আহত হন স্ত্রী সাবিত্রী রায়। তারপরই তাঁকে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করে পরিবার। এরপর দিন পেরতেই শনিবার সকালে মৃত্যু হয় ওই মহিলার। প্রসন্নর বিরুদ্ধে দায়ের হয় খুনের অভিযোগ।
শনিবার গ্রেফতার হন অভিযুক্ত প্রসন্ন। তিন দিনের মাথায় মঙ্গলবার রাতে মৃত্যু। সেদিন সকালে আদালতের নির্দেশে অভিযুক্ত প্রসন্নকে হেফাজতে নিয়েছিল পুলিশ। রাতে লক-আপে শুতে দেওয়ার জন্য একটি কম্বল দেওয়া হয় তাঁকে। পুলিশ সূত্রে খবর, সেই কম্বলের দড়ি গলায় পেঁচিয়ে হেফাজতে থাকা অবস্থায় আত্মহত্যা করেন প্রসন্ন। অভিযুক্তের এই মর্মান্তিক পরিণতি সবার প্রথমে লক্ষ্য় করেন ওই লক-আপেই বন্দি অন্য় অভিযুক্তরা। তাঁরাই মধ্য়রাতে চিৎকার করে সংশ্লিষ্ট থানায় কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীকে ডাকেন। তড়িঘড়ি উদ্ধার করা হয় অভিযুক্ত প্রসন্নকে। নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় ধূপগুড়ি হাসপাতালে। কিন্তু ততক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলেই জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা।
বুধবার তৎপরতা নিয়ে জলপাইগুড়ি পুলিশ মর্গে নিহতের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। নিহত অভিযুক্ত প্রসন্ন রায়ের প্রথম পক্ষের ছেলে অমিত রায় ও পরিবারের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত হয়। তারপর জলপাইগুড়ির মাসকালাইবাড়ি শ্মশানে সম্পন্ন হয় শেষকৃত্য। পরিবার তরফে জানানো হয়েছে, প্রসন্নর গলায় দড়ির দাগ রয়েছে। শরীরে আর কোথাও কোনও আঘাতচিহ্ন নেই। এই বিচারাধীন বন্দির মৃত্য়ুর ঘটনায় জেলা পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও মুখ খুলতে নারাজ তাঁরা। সূত্রের খবর, অন্দরে অন্দরে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।