জলপাইগুড়ি: দশমীর বিভীষিকাময় স্মৃতি ফিকে হয়নি এখনও। তার মধ্যেই ফিরল আতঙ্ক। শনিবার বিকেলে ফের হড়পা বান মাল নদীতে। উত্তরবঙ্গে নাগাড়ে বৃষ্টির জের। নদীতে জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়ছে উদ্বেগ।
এখনও দগদগে দশমীর ক্ষত। মাল নদীতে দুর্গাপ্রতিমা নিরঞ্জনে গিয়ে বিপর্যয়। আচমকা হড়পা বানে বিসর্জন ৮টি প্রাণের। নেহাত ভাগ্যের জোরে বেঁচে গেলেও আহত বহু। ৩ দিনের মাথায় সেই স্মৃতি উস্কে দিল সেই মাল নদীই। ভয়াবহ দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও ফিরল হড়পা বান। সেই মাল নদীতেই।
নিম্নচাপের জেরে উত্তরবঙ্গে নাগাড়ে বৃষ্টি। কালিম্পং পাহাড়ে একটানা বৃষ্টির জেরে উত্তরের একাধিক নদীতে বৃদ্ধি পেয়েছে জলস্তর। জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়াতেই ফের হড়পা বান মাল নদীতে। তবে এইবার হতাহতের কোনও খবর নেই।
শুধু মাল নদীতেই নয়, কালিম্পংয়ের গরুবাথানের চেলখোলাতেও হড়পা বান। বানের জল ঢুকে পড়ে চেলখোলা পিকনিক স্পটের বেশ কয়েকটি দোকানের ভিতর। ভেসে যায় দোকানের জিনিসপত্রও। সেতুর উপর দিয়ে বানের জল যাওয়ায় বিপর্যস্ত যান চলাচলও।
এদিকে মাল নদীতে হড়পা বানে বিপর্যয়ের ৪ দিন পরেও তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা। সঙ্গে অব্যাহত দায় ঠেলাঠেলির পরম্পরাও। নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলার জেরেই এত বড় বিপর্যয়। রাজ্যের শাসকদলকে দুষে সরব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। তিনি বলেন, ‘মালবাজারে যে ঘটনা ঘটেছে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এর বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া উচিত। কারণ আমরা এর আগেও দেখেছি এর আগে মাল নদী থেকে যেভাবে পাথর, বালি উত্তোলন করা হয়, কে বা কারা করছে আমার মনে হয় প্রশাসনের অত্যন্ত যত্নশীল হয়ে তা দেখা উচিত।’
অন্যদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আকস্মিকতার ষুক্তিতেই শান দিলেন মালবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান। বললেন, ‘বিজেপি এবং সমস্ত দল অর্থাৎ বিরোধীরা যারা তথ্য খাড়া করতে চেয়েছিলেন ম্যান মেড আজকের বৃষ্টি প্রমাণ করে এটা ম্যানমেড নয়। এটা হড়পা বান।’
এদিকে বিরোধীদের সমালোচনা, কটাক্ষ ও আক্রমণের মুখে সতর্ক প্রশাসন। মাল নদীর দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে আরও কোথাও না হয়, তা নিয়ে বাড়তি সতর্কতা কলকাতা পুরসভার।গঙ্গায় বান আসার পূর্বাভাস থাকায় শনিবার আগেভাগেই বাবুঘাটে বন্ধ করে দেওয়া হয় বিসর্জন প্রক্রিয়া। ঘিরে দেওয়া হয় ঘাট চত্বর। কিছুক্ষণ পর ফের শুরু হয় বিসর্জন প্রক্রিয়া।