মালবাজার: গুডহোপ চা বাগানের ভালুকটাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আজ, ভোর থেকে ফের খোঁজা শুরু হয়েছে, জানিয়ে দিয়েছে বন দফতর। তবে মাল স্কোয়াড ঘটনাস্থলে রাতভর পাহারা দেয়। প্রয়োজনে কুনকি হাতির সাহায্য নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন বনকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার সকালে ফের মালবাজারে ভালুকের আতঙ্ক ছড়ায়। গুডহোপ চা বাগানে একটি ভালুক ঢুকে পড়ে। বাগানের শ্রমিকরাই প্রথমে ভালুকটিকে দেখতে পান। পরে তাঁরা খবর দেন বন দফতরে। এলাকায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই বন কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ঘটনাস্থলে যায় মালবাজারের এসডিও, মালবাজার থানার আইসি, মালবাজার ব্লকের বিডিও-সহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। নামানো হয় পুলিশের বিশাল বাহিনীও।
নভেম্বরের শেষের দিকেই ডুয়ার্সের লোকালয়ে ভালুক ঢুকে পড়ে। ভগৎপুর চা বাগানে ভালুক ভয়ে হুলুস্থুল শুরু হয়।
গত শনিবারই ভালুকের হামলায় মৃত্যু হয় এক কিশোরের। তার পর সেই ভালুককেও পিটিয়ে মেরে ফেলে স্থানীয়রা। শনিবার ফের চা-বাগান এলাকায় ভালুক দেখে তীব্র আতঙ্ক ছড়ায়। জানা যায়, চা-বাগানে কাজ করতে গিয়ে ভালুক দেখেন কয়েকজন। তাঁদের তেড়ে আসে ভালুকটি।
এর পর ভালুক ধরতে প্রথমে আসরে নামেন জলপাইগুড়ি ও গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের বনকর্মীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় র্যাফ ও বনকর্মীদের। তার পর দিনভর চেষ্টা চালানোর পর অবশেষে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু হয় ভালুকটি।
শনিবার মেটেলি চা বাগানের পর জগতপুর চা বাগানে ফের ভালুকের দেখা পাওয়া যায়। স্বাভাবিক ভাবেই চিন্তা বাড়ে বনকর্মীদের। কারণ কয়েক দিন আগের মেটলির ঘটনা রীতিমতো আতঙ্ক তৈরি করেছিল কর্মীদের মধ্যে। এবার যাতে ভালুক কাউকে আক্রমণ না করে, আবার কোনও ভাবে তাকে যাতে পিটিয়ে হত্যা করতে না পারে গ্রামবাসীরা, তার জন্য আগে থেকে প্রস্তুত ছিল বনকর্মীরা।
নাগরাকাটা ব্লকের সুলকাপাড়া গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার ছাড়টন্ডু বস্তির কাছে ভগতপুর চা-বাগানে ভালুকটি ঢুকে পড়ে। শনিবার সকালে বেশ কয়েকজন চা-বাগানে স্প্রে করতে গিয়ে ভালুকের মুখোমুখি হয়। তাঁদের বক্তব্য, ভালুকটি তাদের হামলা করার চেষ্টা করতেই তাঁরা স্প্রে-এর মেশিনপত্র ফেলে ভয়ে দৌড় লাগান। এর পর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চলে আসে খুনিয়া, ডায়না, মালবাজার, বিন্নাগুড়ি, রামসাই, বীরপাড়া-সহ বিভিন্ন এলাকার রেঞ্জের বনকর্মীরা। পৌঁছে যায় নাগরাকাটা থানার পুলিসও।
খুনিয়া রেঞ্জের রেঞ্জার রাজকুমার লায়েক জানান, বিস্তর খোঁজাখুঁজির পর ভালুকটিকে খুঁজে পাওয়া যায় বিকাল ৪ টা নাগাদ। তার পর বনকর্মীদের ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু হয় ভালুকটি। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় গরুমারা জাতীয় উদ্যানের প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে। সেখান থেকে বিকেলের পর ভালুকটিকে নেওড়াভ্যালি জাতীয় উদ্যানে নিয়ে যাওয়া হয়।