
জলপাইগুড়ি: সকাল তখন আটটা। গ্রামবাসী দেখলেন এক মহিলা মাটি কোপাচ্ছেন। তখনই সন্দেহ হয় সকলের। তারপর দেখা যায়, এক মহিলা সদ্যোজাত একটি শিশুকে মাটিতে কবর দিচ্ছেন। শিশুর দেহ পুঁতে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আর থেমে থাকেননি এলাকাবাসী। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান তাঁরা। বাধা দেন মহিলাকে। এলাকাবাসীর দাবি, শিশুটির মা তাকে খুন করে প্রমাণ লোপাটের দেহ কবর দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে সদ্যজাতর বাবাকে। অভিযুক্তের নাম জিয়ারুল হক। শিশুটির মা পলাতক। গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে ক্রান্তি পুলিশ। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির ক্রান্তি ব্লকের রাজাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রেজিনা বেগম নামে এক মহিলা পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। অভিযোগ, আজ সকাল আটটার সময় এলাকাবাসী লক্ষ্য করেন, নবজাতকটিকে বাড়ির পাশেই মাটি খুঁড়ে পুঁতে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। দৃশ্যটি দেখে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা তৎক্ষণাত পুলিশে খবর দেন। ঘটনার পর থেকেই শিশুটির মা রেজিনা বেগম পলাতক। পরিবার সূত্রে জানা যায়, নবজাতকের বাবা জিয়ারুল হক প্রতিদিনের মতো সকালে ব্যবসার কাজে বেরিয়ে যান। স্থানীয়দের দাবি, শিশুটির মৃত্যু অস্বাভাবিক এবং পুরো ঘটনাই রহস্যে ঘেরা। কেন জন্মের পরপরই শিশুটিকে মাটিতে পুঁতে রাখা হচ্ছিল—তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।খবর পেয়ে ক্রান্তি ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নবজাতকের দেহ উদ্ধার করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা কমলা রায় বলেন, “আমি দেখছিলাম ও কিছু একটা পুঁতে রাখছে। কী পুঁতে রাখছেন সেটা দেখতে গিয়েছিলাম। দেখি বাচ্চাটাকে মেরে পুঁতে দিচ্ছিল। গর্ভাবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করলেও রেজিনা তা কখনও পরিষ্কারভাবে স্বীকার করতেন না।” গ্রামবাসীদের অনুমান, ইতিমধ্যেই চার সন্তানের মা রেজিনা বেগম। পঞ্চম সন্তান হয়ত নিতে চাইছিলেন না। ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল ছড়িয়ে পড়েছে। ধলাবাড়ি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্য কর্মী সীমা দাস জানান, “প্রেগন্যান্সি টেস্টের জন্য দেওয়া ইউরিন কার্ডে রেজিনা জল ব্যবহার করেছিলেন। অভিযোগ, তিনি পুরো গর্ভাবস্থাই লুকিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু কেন এই কাজ করছিলেন কিছুই বলতেন না।”