
বানারহাট: বাড়ি উঠোনে মা বসে খাওয়াচ্ছিল সন্তানকে। হঠাৎ হাজির আস্ত এক চিতাবাঘ। চোখের সামনেই নাবালক সন্তানকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা। চিতাবাঘের হামলায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে কলাবাড়ি চা বাগানে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সন্ধ্যায়। সেখানেই বাড়ির উঠোন থেকেই এক শিশুকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে চিতাবাঘ।
আহত শিশুর নাম পত্রিকা ওঁরাও (১০)। সে কারবালা চা বাগানের বাধ লাইনের বাসিন্দা। জানা গিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যাবেলা শিশুটির মা বাড়ির উঠোনে তাকে খাওয়াচ্ছিলেন। সেই সময় আচমকাই একটি চিতাবাঘ বাড়ির উঠোনে ঢুকে শিশুটির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। মায়ের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে চিতাবাঘটি শিশুটিকে ফেলে দিয়ে চা বাগানের ভিতরে পালিয়ে যায়।
ঘটনায় শিশুটি আহত হয়। স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে প্রথমে বানারহাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত তিন মাসে কলাবাড়ি চা বাগান এলাকায় চিতাবাঘের হামলায় অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। এর আগেও এই বাগানে চিতাবাঘের হামলায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। বনদফতরের দাবি,ইতিমধ্যে কলাবাড়ি চা বাগান এলাকা থেকে সাতটি চিতাবাঘ খাঁচাবন্দি করা হয়েছে। হামলার ঘটনা বাড়তে থাকায় এলাকায় ১০ জন বনকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে এবং দুটি টহলদারি গাড়িও রাখা হয়েছে। তবুও চিতাবাঘের আক্রমণ পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।
বর্তমানে বনদফতরের তরফে কলাবাড়ি এলাকার শ্রমিক বস্তিগুলিকে জাল দিয়ে ঘিরে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। যাতে চিতাবাঘ লোকালয়ে ঢুকতে না পারে। তবে এলাকাবাসীর অনুমান,একটি অংশে কড়া নজরদারি থাকায় চিতাবাঘ অন্য এলাকায় চলে গিয়ে হামলা চালাচ্ছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন বনদফতরের আধিকারিকরা। বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণী স্কোয়াডের রেঞ্জার হিমাদ্রি দেবনাথ-সহ বনকর্মীরা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন। এলাকায় এখনও আতঙ্কের পরিবেশ রয়েছে।