
জলপাইগুড়ি: এসআইআর আবহে আসছে একের পর এক মৃত্যুর খবর। এবার মৃত্যুর খবর এল জলপাইগুড়ি থেকে। আত্মহত্যা বৃদ্ধের। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁর নাম থাকলেও নাম ছিল না স্ত্রীর। এক নয়, দুই স্ত্রী। বিনোদনী রায় ও মিনতি রায়।এদের কারও নাম নেই ২০০২-এর তালিকায়। পরিবারের সদস্যদের দাবি, এটা জানার পর থেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের জগন্নাথ কলোনীর বাসিন্দা নরেদ্র নাথ রায়। এবার কী হবে ভেবেই কূলকিনারা পাচ্ছিলেন না। তাঁদের এবার ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হবে কিনা তা নিয়েও মেয়ের কাছে বারবার জানতে চাইছিলেন। সূত্রের খবর, গত কয়েকদিনের মধ্যে তিনবার তিনি স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন।
অনেকেই নাকি তাঁকে অভয় দিয়েছিলেন। এখনই যে এত আতঙ্কের কিছু নেই তাও বোঝান। নিজে বুঝতেনও। পরের মুহূর্তেই আবার এলাকার কারও না কারও সঙ্গে এসআইআর নিয়ে চর্চা শুরু দিতেন। এদিন সকালেও তিনি স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের কাছে গিয়েছিলেন বলে খবর। কিছু সময় পরে বাড়ি ফিরে আসেন। দুপুরেই বাড়ির পাশে একটি গাছ থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। খবর জানাজানি হতেই এসআইআরের আবহে ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। খবর যায় পুলিশে। জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
মৃতের এক স্ত্রী বিনোদিনী রায় যদিও বলছেন, ২০০২ সালের লিস্টে তাঁর নাম না থাকলেও তিনি ভোট দিয়েছেন। অন্যদিকে প্রশাসন-সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে গিয়ে মৃতের মেয়ে জয়ন্তী রায় বর্মন বলছেন, “মন্ত্রীরা সব আরামে বসে আছেন। আর এদিকে সবার মধ্যে মারপিট লাগিয়ে দিচ্ছে। আমাদের ভোটেই তো ওরা জিতেছে, এখন আমাদেরই মারছে। স্বামীর নাম আছে, কিন্তু স্ত্রীর নেই। কিন্তু এতদিন তাহলে কী করে ভোট দিল? ভোটটা গেল কোথায়? এগুলো তদন্ত করা দরকার।” যদিও বিজেপি নেতা তপন রায়ের দাবি, পারিবারিক সমস্যার জন্যই এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এর পিছনে এসআইআরের অভিযোগ ঠিক নয় বলেই জানাচ্ছেন তিনি।
যদিও এলাকার উপপ্রধান মনোজ ঘোষ বলছেন, “ওনার নাম থাকলেও স্ত্রীর নাম ছিল না। সেই আতঙ্কেই তিনি পঞ্চায়েত সদস্যের কাছে উনি তিনদিন ধরে যাতায়াত করছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেই আতঙ্কেই এই আত্মহত্যা।”