ফাটছে কপাল, চড়া রোদে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে কেউ হচ্ছেন অসুস্থ, এত দুর্ভোগের পরও লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের সুবিধা পাবেন তো? প্রশ্ন মহিলাদের
Lakshmir Bhandar: এই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের গেরোয় ধাক্কা খাবে তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। মুখ্যমন্ত্রীর মহৎ উদ্দেশ্য সর্বাংশে সফল হবে কি না, এটাই এখন প্রশ্ন হয়ে উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে।
জলপাইগুড়ি: রাজ্য সরকারের নয়া প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ (Lakshmi Bhandar) ঘিরে জেলায় জেলায় উত্তেজনা। কোথাও ফর্ম বিলিতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ, কোথাও সরকারি শিবিরের সামনে তৃণমূল নেতা লক্ষ্মীর ভাঁড়-সহ নগদ ৫০০ টাকা বিলিয়ে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। তবে এসবের মধ্যে লক্ষ্মীর ভান্ডারে আবেদন করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোয়াচ্ছেন মহিলারা।
‘দুয়ারে সরকার’-এর দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়েছে গোটা রাজ্যে। আর সেই শিবিরে গিয়েই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের আবেদনের জন্যে ভিড় জমাচ্ছেন মহিলারা। যার ফলে করোনা বিধি যেমন লঙ্ঘন হচ্ছে, তেমননি ঠেলাঠেলি ভিড়ে অসুস্থ হচ্ছেন অনেকে। শনিবারই যেমন জলপাইইগুড়ি জেলায় এক বৃদ্ধা সরকারি ক্যাম্পের সামনে লাইনে ঠেলাঠেলিতে চোট পান কপালে। তবু ঠায় তিনি শিবিরের সামমনে বসে থাকেন। পাছে প্রকল্পের সুবিধা হাতছাড়া হয়। নয়া প্রকল্পের সুবিধা নিতে রাজ্যজুড়ে এমনই খণ্ড খণ্ড ছবি ধরা পড়ছে।
তবে এত সহজেই যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের সেই টাকা মিলবে না তা যেন হাড়ে হাড়ে বুঝছেন মহিলারা। কারণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের নম্বর। সেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের নম্বর ছাড়া কোনওভাবেই জমা দেওয়া যাবে না লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পে আবেদনের ফর্ম। তাই দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের সামনে এমন থিকথিকে ভিড় জমছে মহিলাদের।
প্রথম পর্যায়ের দুয়ারে সরকারে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন বহু মানুষ। তবে জলপাইিগুড়ি জেলায় যেমন অভিযোগ উঠেছে, এখনও পর্যন্ত একটা বড় অংশের মানুষ স্বাস্থ্যসাথী কার্ডই পাননি দুয়ারে সরকারে আবেদনের পরেও। তাই এবারে দুয়ারে সরকারের শিবিরে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের ফর্ম তুলতে গিয়ে এবং তা জমা দিতে গিয়ে ফিরে আসতে হচ্ছে অনেককেই।
এদিকে দীর্ঘক্ষন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কেটে যাচ্ছে। তারপর গিয়ে যখন ফর্ম তুলছেন, তখন বলা হচ্ছে স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড বাধ্যতামূলক! এমন অভিযোগও দেদার।
যাঁরা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আগে আবেদন করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে কিছু সংখ্যক মানুষ সেই স্লিপ দেখালে আবার বলা হচ্ছে এখনও পর্যন্ত স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড এসে পৌঁছয়নি। যার ফলে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। শহরের মানুষরা যতটা বা বুঝছেন, গ্রামেগঞ্জের বয়স্ক বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা তো নাজেহাল। কোথায় যাবেন? কী করে পাবেন এই সাস্থ্যসাথী কার্ড। সেটাই এখন তাঁদের কাছে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
স্বাভাবিকভাবেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের যে উদ্দেশ্য তা সফল হবে, এই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের গেরোয় ধাক্কা খাবে তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। মুখ্যমন্ত্রীর মহৎ উদ্দেশ্য সর্বাংশে সফল হবে কি না, এটাই এখন প্রশ্ন হয়ে উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে।
উল্লেখ্য, এদিন দুয়ারে সরকার ও লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের পরোক্ষভাবে প্রশংসা করেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। বলেন, “ভিড় হচ্ছে দেখেছি। তবে যাদের সুবিধা পাবার কথা তারা পেলেই ভাল।” আরও পড়ুন: সিভিক ভলান্টিয়ারের বেদম মারে অসুস্থ চন্দনা বাউরির সেই গাড়ি চালক! শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হাসপাতালে