জলপাইগুড়ি: দোলা সেন চলে যেতেই প্রকাশ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তৃণমূলের সভামঞ্চ থেকে দলেরই বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল এস সি-এস টি-ওবিসি সেলের জেলা সভাপতি। দলের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস খুব ভাল কোম্পানি। তার সব প্রোডাক্ট খুব ভালো। সারা দেশে সেই প্রোডাক্ট রমরমিয়ে চলছে। তবে জলপাইগুড়ি জেলায় সেই প্রোডাক্ট চলছে না কেন?’ বুধবার জলপাইগুড়ির রানিনগর শিল্পাঞ্চলে এক শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করেছিল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন। সেই অনুষ্ঠানে খুব অল্প সময়ের জন্য হাজির ছিলেন শ্রমিক ইউনিয়নের নেত্রী দোলা সেন। নেত্রী চলে যেতেই ওই মঞ্চে বক্তব্য রাখেন জেলা তৃণমূলের অন্যতম নেতা তথা দলের এস সি, এস টি, ও বি সি, সেলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণ দাস। আর সেখানেই এই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি।
রাজবংশী ভাষায় তাঁর বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে কার্যত বর্তমান তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন তিনি। বলেন, অবিলম্বে জলপাইগুড়ি জেলায় তৃণমূল নেতৃত্বের পরিবর্তন জরুরি হয়ে পড়েছে। এই নিয়ে তিনি নাম না করে রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায় এবং তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি রাজেশ লাকড়াকে নিশানা করেছেন বলেই রাজনৈতিক মহলের দাবি।
কৃষ্ণ দাস এ দিন আরও বলেন, ‘কেন তৃণমূলকে এই অঞ্চলে ভোট দেয় না মানুষ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই হবে।’ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘কিছু নেতার জন্য দলের এই অবস্থা।’ নাম না করে খগেশ্বর রায়কে নিশানা করে বলেন, ‘যে নেতার বাড়িতে শান্তি নেই। ঘরের বৌমা টিকে না। সে কি করে জনগণের নেতা হতে পারে। তাই বদল চাই।’ আর এই বদলের আওয়াজ সঠিক জায়গায় পৌঁছে দিতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
একইসঙ্গে তিনি জানান, জেলার তফশিলি ও আদিবাসীদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী অনেক কিছু করেছে। তবে তাঁরা তৃণমূলকে ভোট দিচ্ছেন না। এই প্রসঙ্গে রাজেশ লাকড়া ওরফে টাইগারকে নিশানা করে তাঁর নাম না করে বলেন, ‘কেউ কেউ আবার এমন ভাবে ভাষণ দেন, শুনে মনে হয় উনি জঙ্গলের বাঘ।’
ঘটনায় বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী বলেন, রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের পরিবারের পাঁচ গৃহবধূ নারী নির্যাতনের শিকার। এর চেয়ে লজ্জার আর কী আছে। আসলে তৃণমূল নেতাদের চরিত্রই এই রকম। এরা সন্ধ্যার পর আর কেউ সুস্থ থাকে না। পাশাপাশি, শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের ওপর দখলদারি নিয়েও সমস্যা আছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বিধায়ক খগেশ্বর রায় কলকাতা থেকে জানিয়েছেন, তিনি এই জাতীয় ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। তাঁর দাবি, যাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে এই অভিযোগ তুলছেন তাঁরা যেন বলার আগে নিজেদের একবার আয়নায় দেখে নেন।