ধূপগুড়ি: গরম বাড়ছে ডুয়ার্সে (Dooars)। আর দিনের তাপ যত বাড়ছে ততই কষ্ট বাড়ছে বন্যপ্রাণীদের। জলের অভাবে প্রায় প্রায়ই লোকালয়ে চলে আসছে তারা। শনিবার এরকমই ঘটনা ঘটে বানারহাট (Banarhat) ব্লকের মোরাঘাট চা বাগানে। প্রচন্ড গরমে চা বাগানে জল খেতে এসেছিল একটি হরিণ ছানা। একেবারেই ছোট্ট বাচ্চা। চা বাগানের নালায় জল খেতে গিয়ে ঘটে বিপত্তি। নালার ভিতর আটকে পড়ে সে। এরপর ছুটে আসেন আশেপাশের লোকজন। আসেন চা বাগানের ম্যানেজারও। হরিণ শাবককে উদ্ধার করে বনকর্মীদের হাতে তাকে তুলে দেন তিনি। বনকর্মী আদর করে তাকে কোলে তুলে ভয় কমে তার। চারপাশে এত লোক দেখে প্রথমে কিছুটা ভয়ই পেয়ে গিয়েছিল ওই শাবক।
শনিবার সকালে বানারহাট ব্লকের মোরাঘাট চা বাগানে শ্রমিকরা কাজ করছিলেন। সেইসময় এইচ-৮ সেকশনে একটি হরিণ শাবক দেখতে পান তাঁরা। পাশেই রয়েছে মোরাঘাট জঙ্গল। চা-শ্রমিকদের ধারণা, ওই জঙ্গল থেকে কোনওভাবে এই চাবাগানে চলে আসে হরিণ ছানা। এরপর শ্রমিকরা হরিণ শাবকটিকে আটকে রেখে বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণ দফতরে খবর দেন।
বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণ দফতরের কর্মীরা এসে হরিণটিকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে নিয়ে যান। তবে এত ছোট বাচ্চা কী করে একা চা বাগানে আসল তা জানার জন্য এদিন বনকর্মীরা চা বাগানে শাবকটির মায়ের খোঁজ করেন। যদিও দীর্ঘক্ষণ খোঁজ চললেও কোনও পূর্ণ বয়স্ক হরিণের খোঁজ মেলেনি।
মোরাঘাট চা বাগানের ডেপুটি ম্যানেজার অমলকুমার দাস জানান, “কয়েকদিন আগে একই সেকশন থেকে একটি পূর্ণবয়স্ক হরিণ উদ্ধার করে বনদফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। মনে হচ্ছে, এদিন উদ্ধার হওয়া শাবকটি খাবার বা জলের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে। অথবা ওই হরিণ ছানা কোনও দলের সঙ্গেও বেরিয়ে এসে পথ হারাতে পারে। তবে এত ছোট শাবক কী করে নিকাশিনালায় এলো তা নিয়ে আমরাও চিন্তিত।”
বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণ শাখার রেঞ্জার শুভাশিস রায় জানান, “হরিণ শাবকটি বার্কিং ডিয়ার প্রজাতির। তিন মাস বয়স। খুবই ছোট। ওর সুরক্ষার জন্য লাটাগুড়ি প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। সেখানেই শাবকটিকে দেখভাল করে বড় করা হবে।”