জলপাইগুড়ি: কথায় বলে জন-জামাই-ভাগ্না তিন নয় আপনা। কিন্তু তা বলে মামাকে খুনের অভিযোগে ভাগ্নের নাম জড়াবে ভাবতেই পারছেন না জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) সদর ব্লকের পাতকাটা কলোনি এলাকার লোকজন। সোমবার এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ঘিরে সরগরম হয় এলাকা। অভিযোগ উঠেছে, পারিবারিক অশান্তির জেরে মামাকে পিটিয়ে হত্যা করে ভাগ্নে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ। এই ঘটনায় আরও দু’জন আহত হন বলেও সূত্রের দাবি। তাঁদের জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার তখন রাত প্রায় সাড়ে ৮টা। জলপাইগুড়ি পাতকাটা কলোনির বাসিন্দা অজিত কুমার সরকারের বাড়িতে আসেন ধূপগুড়ি দেশবন্ধুনগরের বাসিন্দা প্রসেনজিৎ দাম। অজিত ও প্রসেনজিৎ সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে। অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে পারিবারিক কোনও বিষয় নিয়ে শুরু হয় কথা কাটাকাটি। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় চলতে থাকে দু’জনের মধ্যে। মুহূর্তে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায় বলে অভিযোগ।
ঘরেই একটি লোহার রড রাখা ছিল। অভিযোগ, রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে প্রসেনজিৎ ওই রডটি হাতে তুলে নেন। এরপরই মামা অজিত সরকারের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। ক্রমাগত লোহার রড দিয়ে অভিযুক্ত আঘাত করতে থাকেন। এদিকে মামা-ভাগ্নের মধ্যে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি দেখে ছুটে আসেন প্রসেনজিতের আরেক মামার স্ত্রী। অভিযোগ আলো সরকার নামে ওই মহিলার গায়েও হাত তোলেন যুবক। প্রবল চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়।
হইচই শুনে গ্রামবাসী ছুটে আসেন অজিত সরকারের বাড়িতে। তাঁরা এসে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থা। লুটিয়ে পড়ে আছেন অজিত। এদিকে আচমকাই মামার বাড়িতে এত লোক দেখে প্রসেনজিৎ থতমত খেয়ে যান বলে অভিযোগ। পালানোরও চেষ্টা করেন। যদিও এলাকার লোকজন তাঁকে আটকে ফেলেন। খবর দেওয়া হয় থানায়। অন্যদিকে অজিত সরকারকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তড়িঘড়ি। যদিও সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অন্যদিকে আক্রান্ত মহিলাকে এলাকার একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্থানীয় গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান অনিতা রাউত বলেন, “পারিবারিক বিবাদের জেরে ঝামেলা হয়েছে। একজন মারাও গিয়েছেন। আমার কাছে খবর আসতেই পুলিশকে বিষয়টি জানাই। তারা তদন্তও শুরু করেছে।” এদিকে অভিযোগের পরই অকুস্থানে দল নিয়ে পৌঁছন জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ নমুনা সংগ্রহ করেছে। শুরু হয়েছে তদন্ত।