জলপাইগুড়ি: মেয়েকে পছন্দ হয়েছে। পাত্রপক্ষের কথা শুনে মুখে হাসি ফুটেছিল পরিবারের। কিন্তু, কিছুক্ষণ নীরবতা। পাত্রপক্ষ যেন কিছু বলতে চায়। পাত্রীর পরিবারের লোকজন জানতে চাইলেন, কিছু বলবেন? এবার কিছুটা সহজ হয়ে পাত্রপক্ষের একজন বললেন, মেয়ে খুব পছন্দ। কিন্তু, আপনাদের গ্রামের রাস্তাটা…। কয়েক মুহূর্ত নীরবতা। তারপর পাত্রপক্ষ চলে গেল। বিয়ের সম্বন্ধ আর এগেলো না। এটা কোনও সিনেমার প্লট নয়। জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) রাজগঞ্জের বিন্নাগুড়ি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় এটাই বাস্তব ছবি। ‘দিদির দূত’কে কাছে পেয়ে নিজেদের সেই ক্ষেদ জানালেন গ্রামবাসীরা। এমনকি, রাস্তা ঠিক না করলে ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারিও দিলেন। সব শুনে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেন ‘দিদির দূত’ মন্ত্রী বুলু চিক বরাইক। একইসঙ্গে ৩৪ বছরের বাম সরকারের দিকেও তিনি আঙুল তুললেন।
দিদির দূত হিসাবে বৃহস্পতিবার বিন্নাগুড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে গিয়েছিলেন রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী বুলু চিক বরাইক। বিন্নাগুড়ি গ্রামপঞ্চায়েত কার্যালয়ে মন্ত্রী আসবেন শুনে হন গোকুল ভিটা, পেলকা ভিটা-সহ একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা।
গ্রামের মানুষের কাছে সমস্যার কথা শুনতে চান মন্ত্রী। তখন পেলকা ভিটা গ্রামের বাসিন্দারা বেহাল রাস্তার কথা তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, গ্রামের রাস্তা বেহাল। হেঁটেও যাতায়াত করতে অসুবিধা হয়। সবাইকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তাই গ্রামের মানুষজন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভোট বয়কট করবে। এমনকি গ্রামে কোনও নেতা মন্ত্রীদের ঢুকতে পর্যন্ত দেওয়া হবে না। সেইসময়ই এক মহিলা বলেন, বেহাল রাস্তার জন্য তাঁর বাড়িতে বিয়ের সম্বন্ধ ভেঙে গিয়েছে। তাই অবিলম্বে রাস্তা মেরামতের কাতর আবেদন করেন তিনি। পানীয় জল, বিদ্যুতের সমস্যার কথাও তুলে ধরেন অনেকে।
গ্রামবাসীদের কাছে একাধিক অভিযোগ শুনে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “ভোট দেওয়া না দেওয়া আপনাদের সিদ্ধান্ত। আমি কখনও বলব না আমাদের ভোট দিন। নইলে কাজ হবে না। উলটে আমি চাই আপনাদের সমস্যা মিটিয়ে দিতে। আজ আমি আপনাদের সমস্যার কথা শুনলাম। এইগুলি আমি দিদির কানে পোঁছে দেব।”
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ১২ বছরে কী কী উন্নয়ন করেছেন, সেই খতিয়ানও তুলে ধরেন। সেকথা বলতে গিয়ে বামেদের আক্রমণ করেন মন্ত্রী। বলেন, “৩৪ বছর ধরে বামেরা কিছু করেনি। দিদি অনেক উন্নয়ন করেছেন। আরও করবে। দিদির উপর আস্থা রাখুন।” মন্ত্রীর আশ্বাস পেয়ে বাড়ি ফিরলেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের আশা, দ্রুত রাস্তা ঠিক হবে। বাজবে সানাইয়ের সুর।