Scrub Typhus: ডেঙ্গির দোসর হয়ে এবার ভয় ধরাচ্ছে স্ক্রাব টাইফাস, চিন্তা বাড়ছে জলপাইগুড়িতে
Dengue: আপাতত ডেঙ্গি পরিস্থিতি অনেকটাই সামাল দেওয়া গিয়েছে। কিন্তু নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে স্ক্রাবটাইফাস।

জলপাইগুড়ি: ডেঙ্গির (Dengue) চোখরাঙানিতে যখন থর হরি কম্প রাজ্যের একাধিক জেলা। সেই সময় নতুন বিপদের উদয় জলপাইগুড়ি জেলায়। থাবা বসাচ্ছে স্ক্রাব টাইফাস (Scrub Typhus)। মূলত ইঁদুর কিংবা ছুঁচোর মাধ্যমে শহরে ছড়িয়ে পড়ছে এই রোগ। কেউ আক্রান্ত হচ্ছেন, কারও শরীরে আবার এ রোগের উপসর্গ। জলপাইগুড়ি জেলায় এবার ৩ হাজারের উপরে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তিনজন এমন রোগী মারা গিয়েছেন, যাঁদের শরীরে ডেঙ্গি বাসা বেঁধেছিল। তবে আপাতত ডেঙ্গি পরিস্থিতি অনেকটাই সামাল দেওয়া গিয়েছে। কিন্তু নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে স্ক্রাবটাইফাস। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই জেলায় ৬০ জন স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্য়ে রয়েছেন জলপাইগুড়ি শহরের এক বাসিন্দাও। উনি শহরের এক বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এমনও সূত্রের দাবি, ওই নার্সিংহোমে আরও দু’জন রয়েছেন, যাঁদের শরীরে স্ক্রাব টাইফাসের উপসর্গ রয়েছে।
ইতিমধ্যে ওই নার্সিংহোমে আরও দু’জন স্ক্রাব টাইফাসের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছেন বলে নার্সিংহোম সূত্রে খবর। সন্দেহজনক ওই দু’জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য জলপাইগুড়ি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্যাথলজিতে পাঠানো হয়েছে বলেও নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে। চলতি বছরে জেলার প্রায় সবক’টি ব্লকেই স্ক্রাব টাইফাসের কথা শোনা যাচ্ছে। সবথেকে বেশি আক্রান্ত রাজগঞ্জ ব্লকে। আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ জন বলে জানা গিয়েছে।
জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তাও ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু স্ক্রাব টাইফাস কীভাবে দমন করব? এ ক্ষেত্রে নিজেকেই সচেতন হতে হবে। বাড়ি পরিষ্কার রাখতে হবে। জ্বর আসলে ডাক্তার দেখাতে হবে।”
জলপাইগুড়ি স্বাস্থ্য দফতরের পতঙ্গবিদ রাহুল সরকার জানান, স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হলে চিন্তিত না হয়ে সোজা সদর হাসপাতালে যান। সেখানে ক্লিনিক রয়েছে। সহজেই বিনামূল্যে এই রোগের চিকিৎসা করা হয়। রাহুল সরকারের বক্তব্য, চা বাগান, বনবস্তির ঝোপঝাড় এলাকায় গেলে বাড়ি ঢুকে অবশ্যই আগে জামাকাপড় বদলানো দরকার। শুধু তাই নয়, গরম জলে সেই পোশাক ভিজিয়ে রাখারও পরামর্শ দেন তিনি। একইসঙ্গে বাড়িতে ইঁদুর, ছুঁচোর বাড়বাড়ন্ত রুখতে হবে।
মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক অসীম হালদার বলেন, “চলতি বছরে জেলায় ৫৮ জন স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। এর মধ্যে শহরেও একজন আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তের বাড়িতে পতঙ্গবিদকে পাঠানো হয়েছে। ওই এলাকায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”
স্ক্রাব টাইফাস আসলে কী?
স্ক্রাব টাইফাস এক ধরণের পতঙ্গবাহিত রোগ। চিগার বা একধরনের ট্রম্বিকিউলিড মাইটসের (উকুন জাতীয় এক ক্ষুদ্র পোকা) কামড়ে সংক্রমিত হয় এই রোগ।
এই রোগের লক্ষণ কী?
সাধারণত পোকা কামড়ানোর পর চামড়ার উপর গাঢ় লাল কামড়ের চিহ্ন দেখা যায়। রোগীর খিচুনি ও জ্বর আসে। সঙ্গে মাথা ও গায়ে ব্যাথা হয়।
যে ভাবে ছড়ায় স্ক্রাব টাইফাস
* চা বাগান, বনাঞ্চল, বনবস্তি, শহরাঞ্চলে থাকা ঝোপঝাড়ে সাধারণত এই পোকা থাকে। সতর্ক থাকা উচিত সবসময়।
* ইঁদুর কিংবা ছুঁচোর গায়ে এই পোকা বাসা বাঁধে। সেই ইঁদুর কিংবা ছুঁচো বাড়িতে ঢুকে রান্নাঘর কিংবা শোওয়ার ঘরে ঢুকে জামা কাপড় কিংবা বিছানায় এলে তার থেকেও এই রোগ ছড়াতে পারে।