আমলাশোল: ঝাড়গ্রাম জেলার আমলাশোল। এই গ্রামের বাসিন্দাদের অনাহারে মৃত্যু একসময় নাড়িয়ে দিয়েছিল রাজ্য-রাজনীতিকে। সরকার বদলেছে। কিন্তু খুব একটা হাল বদলায়নি আমলাশোলের। অগত্যা আজও গ্রামের মানুষের অনেকেই নির্ভরশীল জঙ্গলের উপর। সেখানেই ঘাপটি মেরে বসে রয়েছে বাঘিনী। সতর্ক রয়েছে বন দফতর। কিন্তু, তারপরেও জীবনের ঝুঁকি নিয়েই জঙ্গলে যেতে হচ্ছে তাঁদের শুধুমাত্র বেঁচে থাকার তাগিদে।
ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি গ্রাম বারবার সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে এসেছে। ২০০৪ সালে এই গ্রামের ৫ জনের অনাহারে মৃত্যু নড়িয়ে দিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিকে। সুর চড়িয়েছিল বিরোধীরা। ২০০৪ সালের সেই ঘটনার পর ২০ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু, মাঠে নামলে দেখা যাবে আমলাশোল আজও আছে আমলাশোলেই। রেশনের চালে এখন অনাহার অতীত। কিন্তু অভাব ঘোচেনি আমলাশোলের মানুষের। বাধ্য হয়ে এখনও গ্রামের মানুষকে পুরোপুরি নির্ভর করতে হয় জঙ্গলের উপরে।
জঙ্গলের কাঠ আর পাতা তুলেই চলে সংসার। কিন্তু, একদিন আগে এই আমলাশোল গ্রাম লাগোয়া কাঁকড়াঝোড় ও ময়ুরঝর্ণার জঙ্গলেই ঢুকে পড়ে ওড়িশার সিমলিপাল থেকে আসা বাঘিনী জিনাত। জিনাতের অবস্থান জানার পরই স্থানীয় গ্রামবাসীদের জঙ্গলে যেতে নিষেধ করেছে বন দফতর। কিন্তু জঙ্গলে না গেলে বাড়ির হাঁড়ি চড়বে না আমলাশোল গ্রামে। অগত্যা, জীবনের ঝুঁকি হার মেনেছে পেটের খিদের কাছে। একদিকে বন দফতরের নিষেধাজ্ঞা, অন্যদিকে বাঘের হামলার আতঙ্ককে সঙ্গী করেই জঙ্গলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন আমলাশোলের মানুষ। সাফ বলছেন, জঙ্গলে না খেলে যে খেতেই পাব না। তবে শুধু আমলাশোল নয় ময়ুরঝর্ণা ও কাঁকড়াঝোড় জঙ্গলের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য গ্রামের মানুষকে এভাবেই নিতান্ত বাধ্য হয়েই যেতে হচ্ছে জঙ্গলে।