
ঝাড়গ্রাম: গিয়েছিলেন ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ ক্যাম্পে। আর সেই শিবিরে গিয়েই গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন তৃণমূল বিধায়ক তথা বন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। শুক্রবার ওই শিবিরে একটি রুমে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। অভিযোগ, গত চার বছরে একবার এলাকায় এসে মানুষের সমস্যার কথা শোনেননি মন্ত্রী। এলাকার সমস্যার কথা বারবার জানানোর পরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মানুষের বিক্ষোভের সামনে কার্যত চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকেন বিরবাহা। শেষে তাঁর সঙ্গে থাকা কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা পরিস্থিতি সামাল দেন।
ঝাড়গ্রামের বিধায়ক বিরবাদা এদিন লালগড় ব্লকের দহিজুড়ি অঞ্চলের বান্দরবনি জুনিয়র হাইস্কুলে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ শিবির পরিদর্শন করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের আর এক মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা এবং মহকুমাশাসক।
তাঁরা ওই শিবিরে পৌঁছনোর পরই বিরবাহাকে কাছে পেয়ে ঘিরে ধরেন গ্রামবাসীরা। তাঁরা অভিযোগ জানাতে থাকেন, এলাকার রাস্তার অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। বারবার বিরবাহা-সহ প্রশাসন-কে জানানো হয়েছে। অথচ কোনও কর্ণপাতই করা হয়নি। এমনকি মন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন তাঁরা।
বিরবাহা হাঁসদাকে ঘিরে বিক্ষোভ
এদিন বিরবাহাকে সামনে পেয়ে রাস্তা, আবাসের কারচুপি-সহ একাধিক সমস্যার কথা তুলে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। শেষে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা। তিনি গ্রামবাসীদের বোঝাতে গেলে গ্রামবাসীরা তাঁর কাছে বন প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেন। কারা মন্ত্রী তাঁদের আশ্বস্ত করেন, এতদিন কী হয়েছে তিনি জানেন না। তবে এবার কাজ হবে। রাস্তার টেন্ডার হয়ে গিয়েছে বলে আশ্বাস দেন। শেষে গ্রামবাসীদের দাবি মেনে বান্দরবনি থেকে কেন্দডাংরি পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার বেহাল রাস্তার অবস্থা পায়ে হেঁটে দেখেন। তারপর তিনি জানান, এই রাস্তার টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু হবে।
কারামন্ত্রীর বারবার আশ্বাসের পর বিরবাহাকে ঘেরাও মুক্ত করেন গ্রামবাসীরা। তবে তাঁদের অভিযোগ, “কোনও কাজই করেননি বিরবাহা। এলাকায় আসেন না। মানুষের কথাও শোনেন না। আজ তাই কাছে পেয়ে সমস্ত অভিযোগ তাঁর সামনে তুলে ধরেছি। আমরা কতটা সমস্যায় থাকি সেটা দেখিয়েছি মাত্র।”
বিরবাহাকে ঘিরে বিক্ষোভ নিয়ে ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবাশিস কুন্ডু বলেন, “আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান নামে ভাঁওতাবাজি প্রোগ্রাম চলছে। এইরকম ভাঁওতালবাজির স্কিম আগেও হয়েছে। মানুষ তা ধরে ফেলেছেন। তাই সেখানকার বাসিন্দারা ক্ষোভ দেখান। দুই মন্ত্রীকে নিয়ে রাস্তা ঘুরিয়ে দেখিয়েছেন। ভোটের আগে এই ভাঁওতাবাজি স্কিমকে মানুষ আর ভালভাবে নিচ্ছে না।”