বংশীহারী: মেলায় যাব, আর ফুচকা খাব না হয় নাকি! কিন্তু সেই তেঁতুল জলে ভরপুর জিভে জলে আনা খাবার যে এমন বিপদে ফেলবে কে ভাবতে পেরেছিলেন। দুর্গা দশমীর (Dashami) মেলায় ফুচকা খেয়ে অসুস্থ প্রায় ২০ জন। বাড়ছে আরও অসুস্থের সংখ্যা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী ব্লকের মহাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়।
জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকজন অসুস্থ বর্তমানে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী ব্লকের রসিদপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মূলত খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এঁরা বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। এদিকে অসুস্থদের মধ্যে ১৮ বছরের নীচে বেশ কয়েকজন নাবালক যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে ৪ জন শিশু এবং ২ জন মহিলা। অসুস্থরা পেটের সমস্যা নিয়েই হাসপাতালে ভর্তি হন। একইসঙ্গে সকলেরই দেখা দিয়েছে জ্বর। রসিদপুর গ্রামীণ হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে৷ পাশাপাশি অবস্থা এমনই যে দশমীর দিন ওই দোকান থেকে আর কারা কারা ফুচকা খেয়েছেন সেই বিষয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে বংশীহারী ব্লক প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী ব্লকের মহাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কল্যাণী এলাকা। দুর্গাপুজো উপলক্ষে দশমীর দিন মেলা বসেছিল এখানে। আসেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের হিন্দু-মুসলিম, সব সম্প্রদাায়ের মানুষ এই মেলাতে আসেন। মেলায় বসেছিল একাধিক ফুচকার দোকান। জানা গিয়েছে, মেলাতে যাঁরা যাঁরা ফুচকা খেয়েছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকে অসুস্থ হতে থাকেন গত রবিবার রাত থেকে।
ফুচকা খাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রায় প্রত্যেকের পেট ব্যাথা, বমি, পায়খানা শুরু হয়। সঙ্গে রয়েছে প্রবল জ্বরের মতো উপসর্গ। এই সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে শুরু করেন একের পর এক রোগী। শনিবার রাতে বেশ কয়েকজন ভর্তি হয়েছিলেন। এর পর এদিনও বেশ কয়েকজন রসিদপুর গ্রামীণ হাসপাতালে একই রকম উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সব মিলিয়ে প্রায় ২০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন একই উপসর্গ নিয়ে। এছাড়াও বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন কয়েকজন বলে খবর। অসুস্থদের বাড়ি বংশীহারীর মুরাদপুর, ইলাসপুর, গোবিন্দপুর, কুসকারি, নিখরিপারা, সাহাপুকুর গ্রামে।
শ্যামল হাঁসদা নামে এক অসুস্থ ব্যক্তি জানান, দশমীর মেলায় স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ফুচকা খেয়েছিলেন। ফুচকা খাওয়ার পর থেকেই অসুস্থ বোধ করছিলেন তাঁরা। পেট ব্যাথা ও পায়খানা শুরু হয় সকলের। তার পর থেকে তিনি সহ পরিবারের চার সদস্যই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বর্তমানে একটু সুস্থ রয়েছেন তাঁরা।
অসুস্থ বর্ণালী দেবনাথ বলেন, তিনিও ফুচকা খেয়েছিলেন। সেই খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এখন তাঁরাও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বংশীহারী ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক পুলকেশ সাহা অবশ্য জানান, এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রত্যেকের চিকিৎসা চলছে। এলাকায় মেডিকেল টিম পাঠানো হয়েছে। পুরো বিষয়ের উপর নজর রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Asansol double Murder: একাদশীর রাতে দুই শ্যালককে জলে ডুবিয়ে খুন, গণপিটুনিতে জখম জামাই!