কলকাতা: সংসদীয় এথিক্স কমিটির রিপোর্টেই সিলমোহর পড়ল। লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে মহুয়া মৈত্রকে। শুক্রবার লোকসভায় ধ্বনি ভোটে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ক্যাশ ফর কোয়ারি বিতর্কে শেষ পর্যন্ত কোপ পড়ল মহুয়ার সাংসদ পদে। বিদেশে কর্পোরেট দুনিয়ার বড় পদ ছেড়ে ২০০৯ সালে রাজনীতিতে আসেন তিনি। প্রথমে যুব কংগ্রেসে। পরে ২০১০ সালে যোগ দেন তৃণমূলে। সাংসদ হওয়ার আগে বিধায়ক হিসেবেও গুরু দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে নদিয়ার করিমপুর থেকে তাঁকে প্রার্থী করেছিলেন মমতা। দলনেত্রীকে নিরাশ করেননি মহুয়াও। পরে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে কৃষ্ণনগর থেকে ভোটে জিতে সাংসদ হন। ঝাঁ চকচকে কর্পোরেট দুনিয়া ছেড়ে মাঠে ময়দানের রাজনীতিতে আসা মহুয়ার সম্পত্তি কত জানেন?
২০১৯ সালের নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী, সেই সময় থেকেই কোটিপতি মহুয়া মৈত্র। ওই সময়ে, তাঁর মোট সম্পত্তি ছিল ২ কোটি ৬৪ লাখ ৯৫ হাজার ২৫০ টাকা। এর মধ্যে নির্বাচনী খরচের জন্য এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কৃষ্ণনগর শাখায় রাখা ছিল ৪৪ হাজার ৭৬৪ টাকা। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাঙ্কে সেভিংস অ্যাকাউন্ট, ফিক্সড ডিপোজিট, টার্ম ডিপোজিটও ছিল তাঁর। যার মোট অঙ্ক ১ কোটি ৪৪ লাখ ৭৫ হাজার ১১১। নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী, বিদেশি ব্যাঙ্কেও টাকা রেখেছিলেন তিনি। এক বিদেশি ব্যাঙ্কের ব্রিটেনের লন্ডন শাখায় সেই সময় তাঁর রাখা ছিল ভারতীয় মুদ্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৮২ টাকা। আর হাতে নগদ অর্থ ছিল মাত্র ৫ হাজার টাকা।
নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী, মহুয়ার সম্পত্তির তালিকায় রয়েছে বিভিন্ন মূল্য়বান গহনাও। এর মধ্যে রয়েছে ৩.২ ক্যারেটের হিরের আংটি, যার দাম ৭০ লাখ টাকা। ১৫০ গ্রাম সোনার গয়নাও রয়েছে, যার দাম নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী ছিল ৫ লাখ টাকা। এছাড়া রুপোর ডিনার সেট, রুপোর চায়ের পাত্রের সেট-সহ বিভিন্ন রুপোর জিনিসপত্র রয়েছে তাঁর। রুপোর সব জিনিসপত্র মিলিয়ে দাম ৫ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। অন্যান্য গয়নাও রয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার।
বিভিন্ন শিল্প-সংগ্রহের নেশাও রয়েছে তাঁর। সেগুলির জন্যও প্রচুর অর্থব্যয় করেছেন। ২০১৯ সালের হিসেব অনুযায়ী, মহুয়ার কাছে ২৫ লাখ টাকার নামী-দামি শিল্প সংগ্রহ রয়েছে। নির্বাচনী হলফনামা বলছে, মহুয়ার একটি স্করপিও গাড়িও রয়েছে। যেটি তিনি কিনেছিলেন ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। ২০১৯ সালের হিসেব অনুযায়ী সেই গাড়ির দাম ছিল ৯ লাখ ৭ হাজার ৩৭৫ টাকা। গাড়ি কেনার জন্য ঋণও নিয়েছিলেন তিনি। ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত তাঁর মাথায় ৬ লাখ ৭১ হাজার ১৩৮ টাকার গাড়ি ঋণ বাকি ছিল।