মালদা: পেটের টানে ঘুরে ঘুরেই কাজ। করোনাকালে কাজ পাওয়াও দুষ্কর। তবু পেটের টানে ভিনরাজ্যে যাত্রা। নিরাপত্তারক্ষীর চাকরি নিয়ে সপরিবারে দিল্লি পাড়ি দিয়েছিলেন রবিউল হক। বিশ্বাস করে বাড়ির চাবিটি দিয়ে গিয়েছিলেন দুই ভাইপোর হাতে। ফিরে এসে দেখলেন বাড়ি উধাও! প্রশ্ন করতে ভাইপোদের হাতে বেধড়ক মার খেতে হল তাঁকে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুরের মহেন্দ্রপুর গ্রামপঞ্চায়েতের আলিনগর গ্রামে।
পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক রবিউল জানিয়েছেন, পরিবার নিয়ে গিয়েছিলেন দিল্লিতে নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ পেয়ে। কিছু রোজগারের আশায়। কিন্তু করোনা আর লকডাউনে চলে যায় কাজ। গ্রামের বসতবাড়ির দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন এলাকারই প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা, নিজের ভাইপো সাবিরুল আর ভাই সফিজুলকে। কিন্তু লকডাউন শেষে ফিরে এসে দেখলেন তাঁদের সেই বসতবাড়ি বেমালুম উধাও! সেখানে গড়ে উঠেছে অন্য বড় বাড়ি।প্রথমে মনে হয়েছিল অন্য ঠিকানায় এসেছেন বুঝি।পরে বুঝলেন, এটা তাঁরই জায়গা। শুধু তাঁর বসত বাড়িটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে অন্য পাকা বাড়ি গড়ে উঠেছে। খোঁজ নিয়ে জানলেন তাঁর দুই ভাইপোই এই কাজ করেছে।
রবিউলের স্ত্রী জানিয়েছেন, নতুন বাড়িতে ঢুকতে গেলে তাঁদের বাধা দেয় সাবিরুল আর সফিজুল। এলাকায় তৃণমূলের দাপুটে নেতা বলেই পরিচিত দুই ভাই। অভিযোগ, নতুন বাড়িতে রবিউল ঢুকতে গেলেই তাঁকে মারধর করা হয়। বের করে দেওয়া হয় বাড়ি থেকে। এরপর, স্ত্রী-ছেলেমেয়েকে নিয়ে স্থানীয় আলিনগর স্কুলবাড়িতেই আশ্রয় নেন তাঁরা। প্রায় অনাহারে দিন কাটছে রবিউলদের। চলছে হুমকি। পঞ্চায়েত বা থানায় যাওয়ার চেষ্টা করলে চলছে মারধর। তৃণমূল নেতার প্রভাবে দায় এড়িয়েছে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত, পুলিশ। এমনকি স্থানীয় বাসিন্দারাও মুখ খোলেননি ভয়ে।
ঘটনায়, বিজেপি জেলা সম্পাদক কিষণ বলেন, “তৃণমূলের অবস্থা এতটাই খারাপ যে ক্ষমতায় আছে বলে নিজের পরিবারকেও ছেড়ে কথা বলছে না। নিজের কাকার ঘর কেড়ে নিচ্ছে। যে তৃণমূল নেতা পরিবারের হতে পারে না, সে সাধারণ মানুষের কী করে হবে। এটাই তৃণমূলের আসল রূপ।” যদিও, তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এমন কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। কারোর প্রতি অন্যায় হয়ে থাকলে তাদের দল সহযোগিতা করবে। প্রয়োজনে দুইপক্ষের সঙ্গেই কথা বলা হবে।
আরও পড়ুন: রাস্তা তৈরিতে ২লক্ষ টাকা কাটমানি! না দিলে কাজ বন্ধের ‘হুমকি’ তৃণমূল নেতার