মালদহ: বুধবার মালদহ জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে চাঞ্চল্যকর এক কথা বলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে উঠে এল গৌঢ়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারে অনিয়মের অভিযোগের কথা। যা নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে শোনা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
এদিন ধরে ধরে বিডিও ও পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে কথা বলেন মমতা। তালিকা ধরে তাঁদের নাম ডেকে বিভিন্ন কাজের খতিয়ান নেন। এর মধ্যে কথা বলেন গৌঢ়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে। উপাচার্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদসূচক সম্ভাষণ জানানোর পরই মমতার সটান প্রশ্ন , “আপনার ওখানে রিক্রুটমেন্ট কে করে?” উপাচার্য জানান তাঁরাই নিয়োগের কাজ করেন। সঙ্গে সঙ্গে মমতা বলেন, “আমি তো শুনছি রিক্রুটমেন্টের কাজ… কোনও এক ব্যক্তি সব রিক্রটমেন্ট করছে!” উপাচার্য না বলার পর মুখ্য়মন্ত্রী জানিয়ে দেন তাঁর কাছে এ নিয়ে ইনফর্মেশন আছে। তাই ক্রসচেক করে নিতে হবে।
উল্লেখ্য, রাজ্যে এসএসসি-র গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি পদে নিয়োগের বেনিয়মের অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা চলছে। এই প্রেক্ষিতে প্রশাসনিক বৈঠকে কোনও নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারে মুখ্য়মন্ত্রীর এহেন মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। যদিও কোন নিয়োগ এবং কার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসার কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এদিকে মমতা জানান, তাঁর কাছে নির্দিষ্ট খবর আছে। তাই তিনি জিজ্ঞাসা করলেন। এর পর উপাচার্যের কাছে মমতা জানতে চান, ‘গৌঢ়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কিসে ভাল করছে?’ উপাচার্য মহাশয় হস্টেল সহ বিভিন্ন সমস্যার কথা বলার পর মমতা জানতে চান বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া সংখ্যা কত। তার পর কলকাতা, সেন্ট জেভিয়ার্স, প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে প্যাচ আপের পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষকরা গেস্ট লেকচারার হিসাবে পড়ালে মান বাড়বে, ছাত্রছাত্রীদের সুবিধা হবে, উপকৃত হবেন তাঁরা।
এর মধ্যেই সিডিএস বিপিন রাওয়াতের দুর্ঘটনার খবর পান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর বন্ধ হয়ে যায় বৈঠক। মমতার কথায়, “দুঃসংবাদটা পেয়ে মন খারাপ হয়ে গেল। আরও কিছু আলোচনার ছিল। কিন্তু এত বড় দুঃসংবাদ এল…” তার কিছুক্ষণ পরেই পর বন্ধ করে দেন প্রশাসনিক বৈঠক।
উল্লেখ্য, বুধবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ তামিলনাড়ুর কুন্নুরে বড়সড় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে একটি এম আই -১৭ সেনা চপার। সেই চপারে ছিলেন সস্ত্রীক সেনা সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়াত-সহ মোট ১৪ জন। সেই খবর এসে পৌঁছতেই মালদহের প্রশাসনিক বৈঠক থামিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “আই অ্যাম রিয়্যালি শকড। আরও কিছু হয়ত আলোচনার ছিল। কিন্তু যেহেতু এমন একটা দুঃসংবাদ এসে পৌঁছেছে তাই একটু আগে শেষ করলাম (বৈঠক)”।