মালদা : কদিন পড়েই বাজবে সানাই। শুরু হয়ে গিয়েছে বিয়ের তোড়জোড়। মালদা (Malda) হরিশ্চন্দ্রপুর থানার শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা মীর জাহান আলমের বাড়িতে যেন উৎসবের মেজাজ। কিন্তু, তার আগে কোনও এক আজানা অভিশাপে যেন লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল মীর জাহানের জীবন। এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা যেন মুহূর্তেই প্রাণঘাতী বাজের আছড়ে পড়ল শিমুলিয়া গ্রামে। সূত্রের খবর, বিয়ের নিমন্ত্রণ করতেই এদিন হরিশচন্দ্রপুর থেকে চাঁচলে যাচ্ছিলেন মীর জাহান। তাঁরই বাইকের পিছনে বসেছিলেন বন্ধু খুশবর খান (২০)। হাসিমুখেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন দুজনে। কিন্তু, কে জানত ততক্ষণে জীবনে বেজে গিয়েছে বিপদ ঘণ্টা। পথেই পাতা রয়েছে মৃত্যু ফাঁদ। সূত্রের খবর, চাঁচল যাওয়ার পথে রাস্তাতেই সিহিপুরের দিকে যাওয়া একটি বেপরোয়া ট্রাক্টর ধাক্কা মারে মীরের বাইকে।
মুহূর্তেই রাস্তায় ছিটকে পড়েন দুই বন্ধু। খুলে যায় মাথার হেলমেট। মারাত্মকভাবে জখম হন দুজনেই। স্থানীয়রাই তাঁদের উদ্ধার করে চাঁচল সুপার স্পেশাল্যাটি হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে এ যাত্রায় মীর জাহান প্রাণে বেঁচে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি বন্ধু খুশবর। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ইতিমধ্যেই তাঁর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে ঘাতক ট্রাকটরটিকে। তবে ঘটনার পর থেকেই পলাতক ট্রাক্টরটির চালক।
ঘটনা প্রসঙ্গে মৃত খুশবর খানের আত্মীয় নুসরাত খান বলেন, “ওরা চাঁচলে বিয়ের নিমন্ত্রণ করতে যাচ্ছিল ওরা। রাস্তাতেই পিছন থেকে একটা ট্রাক ওদের ধাক্কা মারে। সঙ্গে সঙ্গে ওরা বাইক থেকে পড়ে যায়। মাথার হেলমেটও খুলে যায়। শুধু ধাক্কা মেরেই ওরা থেমে থাকেনি। ট্রাকটা একেবারে উঠে যায় ওদের উপর। আমরা থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। ট্রাক্টরটিকে আটক করেছে পুলিশ।” যে জায়গায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে সেখানকার স্থানীয়রা অবশ্য দুর্ঘটনার জন্য রাস্তার বেহার অবস্থাকে দুষছেন। স্থানীয় বাসিন্দা কাজল দাস বলেন, “বিগত পাঁচ বছর ধরে লাগাতার এই ধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে। প্রায়শই ঘটছে দুর্ঘটনা। পুলিশ-প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হচ্ছে না। কিন্তু, কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। এদিকে রাস্তার অবস্থা বেহাল। তা নিয়ে প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। রাস্তার খারাপ অবস্থার কারণেও দুর্ঘটনার ঘটনা বেড়েছে। রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ দেওয়ার কথাও আমরা বলেছি। কিন্তু, পুলিশের দেখা পাওয়া যায় না।”