মালদা: কালিয়াচক-কাণ্ডে নয়া মোড়। ষোলমাইলের ‘হত্যাপুরীর’ ভেতরে এত রহস্য লুকিয়ে যে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন গোয়েন্দারাও। মা-বাবা-বোন-ঠাকুমাকে খুনের মূল অভিযুক্ত আসিফ মহম্মদকে ইতমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা আগেই জানিয়েছিলেন, নিজের বাড়িতে ‘সাইবার ল্যাব’ বানানোর পরিকল্পনা করেছিল আসিফ। সেই মোতাবেক চলছিল গুদাম তৈরির কাজ। বাড়ির লাগোয়া জমিতেই প্রায় ৭০ ফুট উঁচু সেই বিরাট গুদামঘরের মধ্যে একটি গোপন সুড়ঙ্গ-সহ একাধিক ছোটবড় খুপরিও খুঁঁজে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। এ বার, আরও চাঞ্চল্য়কর তথ্য উঠে এল গোয়েন্দাদের হাতে। গুদাম বানিয়েছিলেন যে ৪ জন মিস্ত্রী, নিখোঁজ তাঁরাও! মিস্ত্রীদের এই বেপাত্তা হওয়া বিশেষ ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের।
বাড়ির লাগোয়া একটি ৭০ ফুট উঁচু গুদামঘর বানানোর কারণ কী কেবল সাইবার ল্যাব তৈরিই ছিল, নাকি এর পেছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য় কাজ করছিল তাও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। পাশাপাশি, বাড়ির মধ্যে যে গোপন সুড়ঙ্গ পাওয়া গিয়েছিল, তদন্তকারীরা জানিয়েছেন ওই সুড়ঙ্গ দিয়েই নিজের মা, বাবা, বোন ও ঠাকুমাকে গুদামঘরে এনে চৌবাচ্চায় চুবিয়ে রেখেছিল আসিফ। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রথম থেকেই আসিফের বন্ধু সাবির আলি জানিয়েছিল, গুদামঘরের দেওয়ালে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ একা আসিফেরই। সে গেট বানাবে বলে সাহায্যে চেয়েছিল সাবিরের। কিন্তু, সাবির তা করতে রাজি হয়নি। তবে জেরায় সাবির স্বীকার করে সুড়ঙ্গ বানাতে আসিফকে সাহায্য় করেছিল সে-ই।
তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, সাবির জেরায় আরও জানিয়েছে, গুদাম তৈরির কাজে আসিফ চারজন মিস্ত্রীকে কাজে লাগিয়েছিল। তবে সেই চারজন মিস্ত্রী স্থানীয় লোক নয়। ফলে তারা কারা বা কোথা থেকে এসেছে তা জানত না সাবির। এরপরেই মিস্ত্রীদের খোঁজ শুরু করেন গোয়ন্দারা। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত খোঁজ পাওয়া যায়নি তাঁদের। এমনকী, আসিফের প্রতিবেশীরাও মনে করতে পারছেন না কাজ করতে আসা সেই মিস্ত্রীরা ঠিক কোথাকার। আসিফের থেকেও এ বিষয়ে বিশেষ কোনও তথ্য় পাওয়া যায়নি। উত্তর দিতে পারেনি আসিফের দাদা আরিফ মহম্মদও। মিস্ত্রীদের এভাবে নিখোঁজ হওয়ার পেছনে গভীর কোনও ষড়যন্ত্র আছে বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা। কালিয়াচক থানা সূত্রে খবর, মঙ্গলবার, ১৬৪ ধারায় আসিফের দাদা আরিফ মহম্মদকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ১৬৪ ধারায় গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: Malda Murder: ‘অর্থমনর্থম’! শুধু টাকার জন্যই কি মামাকেও খুন করতে চেয়েছিল আসিফ?