
মালদহ: প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করাতে চান নি, কিন্তু পরে চাপ দিয়ে তাঁকে স্কুলে শিক্ষক নিয়োগে বাধ্য করানো হয়েছে। সেই শিক্ষকের নামই এখন দাগিদের তালিকায়।বিস্ফোরক প্রধান শিক্ষক। মালদহের চাঁচলের খরবা এলাকার হরিনারায়ণ এগ্রিল হাইস্কুলের বাংলা বিষয়ের শিক্ষক আজাদ আলি মির্জার নামও রয়েছে দাগিদের তালিকায়৷
জানা গিয়েছে, আজাদ সক্রিয় তৃণমূল কর্মী। এলাকায় তিনি যথেষ্ট প্রভাবশালী বলেও জানা যাচ্ছে। নেতাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। ২০২১ সালে এই স্কুলে যোগ দিয়ে ছিলেন তিনি৷ এক বছর চুটিয়ে শিক্ষকতা করেছেন৷ কিন্তু পড়ুয়াদের তিনি কী পড়িয়েছেন, সেটা জানা নেই ছাত্র এমনকি শিক্ষকদেরও৷ সবচেয়ে বড় বিষয়, যেদিন তিনি স্কুলে যোগ দিতে আসেন, সেদিন তাঁর সঙ্গে থাকা নিয়োগপত্রে কোনও স্বাক্ষর ছিল না৷
প্রধান শিক্ষক তাঁকে কাজে যোগ দিতে দেননি৷ পরবর্তীতে এসএসসি দফতর থেকে মির্জা সাহেবের নিয়োগপত্র প্রধান শিক্ষককে ই-মেইলে পাঠানো হয়৷ সেকথা জানাচ্ছেন খোদ প্রধান শিক্ষক৷ যদিও ২০২৩ সাল থেকে স্কুলে আর যাননি কালিয়াচকের বাসিন্দা মির্জা সাহেব৷ কেন তিনি স্কুলে আর যাননি, সেটা কেউ জানে না৷ এখনও তাঁর মোবাইল ফোন সুইচ অফ৷
এই ঘটনা জানাজানি হতেই শোরগোল পড়েছে চাঁচলজুড়ে৷ মানুষজনের বক্তব্য, এই ঘটনাতেই পরিষ্কার, রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি ঠিক কোন পর্যায়ে পৌঁছে ছিল৷ এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক হোসেন আলি বলেন, “ও আমাদের স্কুলে লক ডাউনের সময়ে এসেছিল। রেকমেনডেশনটা বাই পোস্টে আসেনি, হাতে হাতে এসেছিল। তাই আমি ওকে জয়েন করাতে চাইনি। পরে মেইলে রেকমেনডেশন আসে। ডিআই-এর পরামর্শ নিয়ে জয়েন করাই। ২০২০ সালে জয়েন করে, ২০২১-২২এর মধ্যেই চলে যায়। ১০-১২ মাস চাকরি করে।”
প্রসঙ্গত, শনিবারই ‘দাগি’দের তালিকা প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তাতে ১৮০৬ জনের নাম রয়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইটে দাগিদের এই তালিকা আপলোড করা হয়েছে। কমিশন সূত্রে খবর, এটাই চূড়ান্ত তালিকা। এতে নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশের শিক্ষকদের নাম আছে। এরপর আর কোনও তালিকা প্রকাশিত হবে না বলে কমিশন সূত্রের খবর। বৃহস্পতিবারই সুপ্রিম কোর্ট এক সপ্তাহের মধ্যে দাগিদের তালিকা প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছিল।