মালদা: মাঝমধ্যেই প্রতিবেশীর বাড়িতে গল্প করতে যেতেন তিনি। সারা দিনের কাজের শেষে সেটাই ছিল ‘রিফ্রেশমেন্ট’। সোমবার রাতেও গিয়েছিলেন। আচমকাই ঘর থেকে একটা গোঙাানির শব্দ শুনতে পান অনান্য প্রতিবেশীরা। তার আগে অবশ্য বেশ কিছুক্ষণের কথা কাটাকাটির আওয়াজও কানে ভেসে আসে। বিপদ আঁচ করেই অনান্য প্রতিবেশীরা ঘরে ঢুকে সিভিক ভলেন্টিয়ারকে বিভত্স অবস্থায় দেখতে পান। প্যান্ট ভেসে যাচ্ছে রক্তে। দুটো হাত চেপে যৌনাঙ্গ ধরে রেখেছেন। উপচে বেরিয়ে আসছে রক্ত। শিউরে ওঠার মতো দৃশ্য। স্তম্ভিত হয়ে যান প্রত্যক্ষদর্শীরা। ভয়ঙ্কর ঘটনা মালদার (Maldah) মোথাবাড়ি থানা এলাকার পঞ্চনন্দপুর এলাকায়।
জানা গিয়েছে, আক্রান্ত ব্যক্তির নাম বিফল চৌধুরী। তিনি সিভিক ভলেন্টিয়ার। প্রতিবেশীদের থেকে জানা গিয়েছে, বিফলকে যে বাড়ি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানে মাঝেমধ্যেই যেতেন তিনি। কাজ শেষে বাড়ি ফেরার আগে সেখানে আড্ডা মারতেন। তারপর বাড়ি ফিরতেন। পরিবারের সদস্যরাও সেকথা জানেন। বিফলের বাড়ির দু’পা দূরেই সেই বাড়ি।
বিফলকে সেদিনও ওই বাড়িতে ঢুকতে দেখেন প্রতিবেশীরা। তারপর অবশ্য আর কেউ স্বাভাবিকভাবেই নজর রাখেননি। মাঝে একটু চিত্কার চেঁচামেচি শুনতে পেয়েছিলেন, আর তারপর গোঙানির শব্দ। সেই শব্দ শুনেই ঘরে ঢুকে বিফলকে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে কাতরাতে দেখেন প্রতিবেশীরা।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, “মেঝে রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। বিফল পুরো রক্তাক্ত ছিল। প্যান্ট উপচে রক্ত বেরোচ্ছে। প্রথমে তো আমরা বিষয়টি বুঝতেই পারি নি। পরে দেখি ছটফট করতে করতে বিফল নিজের যৌনাঙ্গ ধরার চেষ্টা করছে। তখনও ওতটা বিপদ বুঝি নি। যৌনাঙ্গ কার্যত কোপ দিয়ে কেটে নেওয়া হয়েছে।”
প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, বিফলকে যখন ঘর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়, তখন তাঁর আশেপাশে আর কেউ ছিলেন না। তবে এই ঘটনার ওই বাড়ির মালিকের ওপর সন্দেহ প্রতিবেশীদের। বিফল কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না। ফলে তাঁর কাছ থেকে তেমন কিছুই জানতে পারেননি প্রতিবেশীরা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। বিফলকে উদ্ধার করে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায়, আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তদন্তে নেমেছে মাথাবাড়ি থানার পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, কী কারণে এই ঘটনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। যাঁর বাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে, তিনিও পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে।
তবে প্রতিবেশীদের মধ্যে গুঞ্জন, গ্রামেরই এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন বিফল। একটা ত্রিকোণে প্রেম গড়ে উঠেছিল। তা নিয়েই হয়তো প্রতিবেশীর সঙ্গে ঝামেলা হয়। তাতেই এই ঘটনা। তবে এখনও পর্যন্ত এর পক্ষে তথ্য প্রমাণ তেমন হাতে পায়নি পুলিশ। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিফল কিছুটা সুস্থ হলে তাঁরও বয়ান নেওয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।