Malda Murder: ‘হত্যাপুরী’তে ‘জঙ্গিযোগ’? পুলিশের তদন্তে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য

Malda Murder: শনিবার আসিফের বাড়ির গোডাউনে মাটির তলায় সিমেন্ট বালি দিয়ে চাপা দেওয়া ছিল তার মা, বাবা, বোন ও ঠাকুমার দেহ।

Malda Murder: 'হত্যাপুরী'তে 'জঙ্গিযোগ'? পুলিশের তদন্তে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য
নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Jun 20, 2021 | 11:18 AM

মালদহ: কালিয়াচকের ‘হত্যাপুরী’র (Maldah Murder) পরতে পরতে রহস্যের বেড়াজাল। সামান্য কোনও খুনের ঘটনা এটা নয় বলেই মনে করছে তদন্তকারীরা। বরং এই হত্যাকাণ্ডের শিকড় যে বহু গভীরে ছড়ানো, তেমনটাই অনুমান পুলিশের। জঙ্গিযোগের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না এ ক্ষেত্রে। রবিবার আদালতে তোলা হবে আসিফকে। পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্যে আবেদন করবে বলেই জানা গিয়েছে। অন্যদিকে তাঁর দুই বন্ধুকেও এদিন গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার রাতে তাদের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল। একইসঙ্গে নিরাপত্তা বাড়াতে আসিফের বাড়ির সামনে পুলিশি ক্যাম্প বসানো হয়েছে। আপাতত গোটা বাড়ি পুলিশের দখলে।

একটা বড়সড় চক্র যে এখানে চলত তা মূল অভিযুক্ত মহম্মদ আসিফকে গ্রেফতার করে ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত পেয়েছে কালিয়াচক থানার পুলিশ। শনিবার রাতেই ধরা হয় আসিফের দুই বন্ধুকেও। একইসঙ্গে জানা গিয়েছে, এই আসিফ একবার নিজেই নিজেকে ‘অপহরণ’ করে বাবার কাছ থেকে টাকা হাতানোর পরিকল্পনা করেছিল।

কালিয়াচক থানার পুরাতন ১৬ মাইল এলাকায় পরিবারের চার সদস্যকে খুন করে গুদাম ঘরে গুম করে রাখার অভিযোগ ঘিরে শনিবার থেকে শোরগোল পড়ে যায় মালদহে। তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে পায় পুলিশ। বাড়িময় সিসি ক্যামেরা, ল্যাপটপ, সেভেন এমএম পিস্তল, ৮৪ রাউন্ড কার্তুজ থেকে বাড়ির ভিতর গোপন সুড়ঙ্গ —পরতে পরতে রহস্য এই আসিফকে ঘিরে।

আরও পড়ুন: নমাজে অনীহা ছিল আসিফের, বাড়ি থেকে উদ্ধার ৫টি সেভেন এমএম পিস্তল ও ৮৪ রাউন্ড কার্তুজ!

এরইমধ্যে পুলিশের অনুমান, এই ঘটনার সঙ্গে জঙ্গিযোগের সম্ভাবনা থাকলেও থাকতে পারে। উল্লেখ্য, সেই পথ ধরে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কারণ, আসিফ বা তার বন্ধু সাবির আলি, মহফুজ শেখকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ যে সমস্ত তথ্য পেয়েছে তার মধ্যে প্রচুর অসঙ্গতি রয়েছে বলেই খবর। একইসঙ্গে তাদের অতীতের অপরাধপ্রবণতাও প্রকাশ্যে এসেছে। এর আগে আসিফ নিজেকেই নিজে ‘অপহরণ’ করে বাবার কাছ থেকে মুক্তিপণ হিসাবে আড়াই লক্ষ টাকা নিয়েছিল। আর তাতে সহযোগিতা করেছিল এই বন্ধুরা। পরবর্তীতে নানা অপরাধ, সাইবার ক্রাইমেও যুক্ত হয় তাঁরা।

শনিবার আসিফের বাড়ির গোডাউনে মাটির তলায় সিমেন্ট বালি দিয়ে চাপা দেওয়া ছিল তার মা, বাবা, বোন ও ঠাকুমার দেহ। পরে জেরার মুখে আসিফ জানায়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে নিজের মা, বাবা, বোন, দাদা আর ঠাকুমাকে ঠান্ডা পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে দেন সে। ওষুধের প্রভাবে তাঁরা যখন আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে, সে সময়ই আসিফ ওই গোপন সুড়ঙ্গপথে গুদামে নিয়ে যায় তাঁদের।

সেখানে একটি জলের চৌবাচ্চা বানিয়ে পাঁচজনের দেহ ডুবিয়ে রাখে। তখনই কোনওরকমে জ্ঞান ফিরে পান আসিফের দাদা আরিফ। সঙ্গে সঙ্গে তিনি পালানোর চেষ্টা করেন। ওই মুহূর্তে ভাইয়ের সঙ্গে কার্যত মারপিট করে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান আরিফ। দাদাকে মারতে না পারলেও পরিবারের বাকি সদস্যদের এভাবেই জলে চুবিয়ে রাখার পর সিমেন্ট বালি চাপা দিয়ে মাটিতেই প্রায় জ্যান্ত কবর দেয় আসিফ।

আরও পড়ুন: কোভিডের বাড়বাড়ন্তে ঘাবড়ে গেল ডেঙ্গি? গত দেড় বছরের পরিসংখ্যানে তেমনই ইঙ্গিত

শনিবার রাতে আসিফের বন্ধুর বাড়ি থেকে ৫টি সেভেন এমএম পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৮৪ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানে একটি বিরাট র‍্যাকেট চলত। যা সাইবার ক্রাইম, হ্যাকিং, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিট কয়েন চক্রের সঙ্গে যুক্ত। পাশাপাশি অন্যান্য অপরাধ এমনকী কোনও জঙ্গি যোগও থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। সেইমতোই এগোচ্ছে তদন্ত।