Murshidabad Murder: টিউশন পড়তে গিয়েই কিশোর-বেলার প্রেম, ল্যাপটপ ভর্তি ‘ঘনিষ্ঠ’ ছবি, ‘গভীর প্রেমে’র পরিণতি এত নৃশংস?

Murshidabad Murder: সুশান্তকে নাকি ভুলতে বসেছিলেন সুতপা। আর সেটাই সহ্য হয়নি সুশান্ত-র। সেই ক্ষত থেকেই এমন পরিণতি বলে মনে করছেন প্রতিবেশীরা।

Murshidabad Murder: টিউশন পড়তে গিয়েই কিশোর-বেলার প্রেম, ল্যাপটপ ভর্তি 'ঘনিষ্ঠ' ছবি, 'গভীর প্রেমে'র পরিণতি এত নৃশংস?
সুতপা ও সুশান্ত (ছবি- ফেসবুক থেকে প্রাপ্ত)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 03, 2022 | 7:34 PM

মালদহ: সুতপা তখন অষ্টম শ্রেণি। সুশান্তও তখন স্কুলের ছাত্র। টিউশন পড়তেই নাকি সুতপার বাড়িতে যেতেন সুশান্ত। কিশোর বয়সের ভাললাগাই কখন যেন প্রেমে পরিণত হয়। সুতপার প্রতিবেশীদের বয়ান অনুযায়ী, ইংরেজবাজারের সানি পার্কেই তাঁদের প্রেমের গল্প শুরু। একসঙ্গে যাতায়াত, অলিতে-গলিতে গল্প, রাস্তার ধারে খাওয়া-দাওয়া, সান্ধ্য-আড্ডা অনেক কিছুরই সাক্ষী এই সানি পার্ক। তবে সেই প্রেমের গল্পের শেষটা যে এত ‘ট্র্যাজিক’ হবে, তো বোধহয় ভাবেননি পাড়া-প্রতিবেশীরাও। গত সোমবার মুর্শিদাবাদে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে সুতপাকে। ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন সুশান্ত।

ছেলেবেলার প্রেম থেকে সরে আসছিল সুতপা!

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টান কমেছিল সুতপার, সে কথা অনেকেই জানতেন। সুতপার বাবা, পেশায় শিক্ষক স্বাধীন চৌধুরী কোনও দিন অপরিণত বয়সের এই প্রেম মেনে নেননি। গত এক-দেড় বছর ধরে একটু একটু করে নিজেকে সরিয়ে আনছিলেন সুতপা। তৃতীয় বর্ষের এই ছাত্রীর ঘনিষ্ঠরা বলছেন, তথাকথিত ‘ভাল মেয়ে’ বলেই পরিচিতি ছিলেন সুতপা। তবে মনে হয়ত সুশান্ত-র জন্য তেমন কোনও জায়গা ছিল না আর। এই প্রেম থেকে যাতে সুতপা সরে যান, সেই কারণেই তাঁকে বহরমপুরে পাঠিয়ে দিয়েছিল তার পরিবার। প্রতিবেশীদের দাবি দীর্ঘদিনের সম্পর্ক মুছে যাচ্ছে, এটা বোধ হয় মানতে পারেননি সুশান্ত।

উল্লেখ্য, ওল্ড মালদায় বাড়ি হলেও সানি পার্কে পিসির বাড়িতেই মানুষ হয়েছেন সুশান্ত। আর সেই পিসির বাড়ির কাছেই বাড়ি সুতপার। সেই সূত্রেই আলাপ তাঁদের।

সালিশিসভা বসিয়ে মুছে ফেলা হয় ল্যাপটপ ভর্তি ছবি

মাস কয়েক আগে সালিশিসভা বসানো হয়েছিল ইংরেজবাজারে। স্থানীয় কাউন্সিলর-সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন সেখানে। সুতপার বাবার অভিযোগ, ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করতেন সুশান্ত। হুমকিও দিতেন। আর তাই সালিশিসভা বসাতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি।

সেই সালিশিসভায় ল্যাপটপ আনতে বলা হয়েছিল সুশান্তকে। দেখা যায় সেই ল্যাপটপে ভর্তি সুতপা-সুশান্তর ছবি। মন থেকে সরানো তো দূরে থাক, সুশান্তর মন জুড়ে শুধুই সুতপা ছিল, তেমনটাই মনে করছেন ঘনিষ্ঠরা। সেই সব ছবি মুছে ফেলা হয় ওই সালিশিসভায়। কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি। বারবার ফোন যেত সুতপার কাছে। হুমকি দেওয়া হত তাঁকে। তবে এত নৃশংস পরিনতি হতে পারে, তা ভাবতে পারেননি কেউ।

আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের অনুমান, ভালবাসার মানুষকে না পাওয়ার আক্রোশ থেকে এ ভাবে সুতপাকে খুন করেছেন সুশান্ত। ধরা পড়ার পরও তাঁর তেমন কোনও বিকার নেই।

ঠিক কী ঘটেছিল?

মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে একটি মেসে থাকতেন সুতপা। আর তার সামনেই সোমবার ভরসন্ধ্যায় প্রথমে গুলি করা হয় তাঁকে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে কোপানো হয় ধারাল অস্ত্র দিয়ে। পুলিশ সুপার কে শবরী ঘটনার পরই জানান, নিহত তরুণী মালদহের বাসিন্দা। বহরমপুরে থেকে পড়াশোনা করতেন তিনি। ওই দিন রাতেই গ্রেফতার করা হয় সুশান্ত চৌধুরী নামে ওই যুবককে। তিনি পুকুরিয়া থানা এলাকার পীরগঞ্জের বাসিন্দা।