মালদা : গঙ্গার ভাঙন মালদা জেলায় বরাবরই চিন্তার কারণ। নদীর পাড় ভাঙা নিয়ে আতঙ্কে রাত কাটে, নদী তীরবর্তী এলাকায় মানুষদের। আর এরই মধ্যে নতুন করে চিন্তা বাড়াচ্ছে কোশি। প্রায় মরা নদী। কিন্তু এই মরা নদীই এখন আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে রতুয়ায় কোশি তীরবর্তী এলাকার মানুষদের। কোশি নদীতেও এখন শুরু হয়েছে নদীর পাড় ভাঙন। বিপন্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। কোশি নদীর এখন যা পরিস্থিতি, তা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পার্শ্ববর্তী সাত-আটটি গ্রামের। প্রায় মরে যাওয়া কোশি নদীর এমন ভয়ঙ্কর ছবি এর আগে কখনও দেখেননি গ্রামবাসীরা।
কিন্তু কেন হঠাৎ এমন পরিস্থিতি হল? গঙ্গার বিপুল জলরাশি এখন ঢুকতে শুরু করে দিয়েছে কোশি নদীতে। ফলে প্রায় মরে যাওয়া কোশি নদীরও চেহারা বদলে গিয়েছে। ফুলে ফেঁপে উঠেছে কোশি নদী। শুরু হয়েছে ভাঙন। ভাঙন পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগের হয়ে দাঁড়িয়েছে যে কোশি নদী এখন প্রায় ফুলহারের সঙ্গে মিশে যাওয়ার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর যদি এমন কিছু হয়, তাহলে পরিস্থিতি খুবই বিপজ্জনক হয়ে উঠবে বলেই আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসীরা।
দুশ্চিন্তায়, ভয়ে, আতঙ্কে রাত কাটছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। অনেক পরিবারের ঘরের উঠোনে পর্যন্ত ফাটল দেখা দিয়েছে। কোশির মতো প্রায় মরা একটি নদীও যে তাঁদের রাতের ঘুম কেড়ে নিতে পারে, এমন কথা তাঁরা কখনও কল্পনাও করতে পারেননি। আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। যেভাবে কোশি নদীর পাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে, তাতে আর তিন-চার দিনের মধ্যে নদী বাঁধ সহ পার্শ্ববর্তী বেশ কিছু গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শুধু রতুয়া-১ ব্লকের বিলাইমারি-মহানন্দটোলাই নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে মানিকচক ব্লকের ভূতনি চরের বিস্তীর্ণ অংশ।
এরই মধ্যে যদি আবার ফুলহরের পাড়েও ভাঙন শুরু হয়ে যায়, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। একদিকে গঙ্গার ভাঙন, তার উপর কোশি… এরপর যদি ফুলহর নদীতেও যদি এমন কোনও ভাঙন পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে এই তীরবর্তী এলাকাগুলি যে কোনও সময়ে জলমগ্ন হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা। গ্রামবাসীরা ইতিমধ্য়েই বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। কিন্তু এলাকাবাসীদের অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত রতুয়ার এই এলাকা পরিদর্শনে আসেননি প্রশাসনের কেউ। এই নিয়ে ক্ষোভও তৈরি হয়েছে স্থানীয়দের একাংশের মনে।