Sukanta Majumder: ‘মুখ্যমন্ত্রী না বাটপাড়! লোকে তো কনফিউজ হয়ে যাবে’

Mamata Banerjee: তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের গোয়া সফরকে প্রথম থেকেই বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি। পদ্ম শিবিরের দাবি, যে দলের সংগঠনই পোক্ত নয়, সেই দল কী করে ক্ষমতায় আসবে?

Sukanta Majumder: 'মুখ্যমন্ত্রী না বাটপাড়! লোকে তো কনফিউজ হয়ে যাবে'
মমতাকে আচার্য করার ভাবনা প্রসঙ্গে সুকান্ত (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 29, 2021 | 7:52 PM

মালদা: গোয়ায় তিনদিনের সফর সারছেন মুখ্যমন্ত্রী  মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee)। শুক্রবারই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন ভারতের প্রাক্তন টেনিস খেলোয়াড় লিয়েন্ডার পেজ। এদিন, মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই দলে যোগ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, সেখানে ইতিমধ্যেই সিভিল সোসাাইটির সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন। মুখ্য়মন্ত্রীর গোয়া-সফর নিয়ে এ বার তীব্র কটাক্ষ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder)।

মালদার টাউন হলে  বিজেপির সংবর্ধনা সভা  থেকে সুকান্ত এদিন চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেন তৃণমূল সুপ্রিমোকে (Mamata Banerjee)।  তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এতদিন বলতেন তিনি নাকি বাংলার মেয়ে। এখন গোয়ায় গিয়ে বলছেন তিনি গোয়ার মেয়ে। বলছেন তিনি নাকি বহিরাগত নন। আরেহ! মুখ্যমন্ত্রী না বাটপাড়! লোকে তো কনফিউজ হয়ে যাবে! এরপর তো লোকে তাহলে লিখবে ‘বাংলা-গোয়ার মেয়ে’। ভাববে, বাপরে বাপ, কোথাকার মেয়ে রে!”

এখানেই না থেমে আরও একধাপ সুর চড়িয়ে সুকান্ত বলেন, “মাঝেমধ্যে কিছু মানুষের সাধ হয় যে প্রধানমন্ত্রী হবেন। তা সে সাধ হতেই পারে। তাতে না বলা যায় না। তা সেই সাধ পূরণ করতে একজন আজ ত্রিপুরা কাল গোয়া ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তা ঘুরে বেড়ান। শুধু তাই নয়, নিজের দলেও লোক ঢোকাচ্ছেন। যেমন নাফিসা আলি। তিনি বর্ষীয়ান নেত্রী। তাঁকে আমরা সম্মান করি। কিন্তু, নাফিসার তো রাজনৈতিক ক্যারিয়ার এক্সপায়ার করে গিয়েছে। যাঁরা কোনওদিন রাজনীতি করেননি বা যাঁদের আর রাজনীতিতে কোনও কিছু করার নেই,  তাঁদের নিয়ে মমতা দল গড়ছেন। এভাবে কী ক্ষমতা দখল করা সম্ভব! বাংলায় যখন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসেছিলেন, তখন তাঁদের ‘বহিরাগত’ বলে তোপ দেগেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ তিনি নিজে গোয়ায় গিয়ে নিজের বহিরাগত তকমা  বদলাতে তত্‍পর।”

প্রসঙ্গত, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের গোয়া সফরকে প্রথম থেকেই বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি। পদ্ম শিবিরের দাবি, যে দলের সংগঠনই পোক্ত নয়, সেই দল কী করে ক্ষমতায় আসবে? কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার কটাক্ষ হেনে বলেছেন, “গোয়ায় কেউ ঘুরতে যেতে চাইলে যেতেই পারেন। তবে দল গঠন করার লাভ হবে না।”

একুশের বাংলা বিধানসভা ভোটে জিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, এবার গোটা দেশজুড়েই খেলা হবে। ইতিমধ্যেই ত্রিপুরাতে ডালপালা মেলতে শুরু করেছে ঘাসফুল। এরই মধ্যে গোয়াতেও চমক জিইয়ে রাখলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আরব সাগরের তীরে শুক্রবারের দুপুরে একেবারে ‘খেলা’ জমজমাট। টেনিস জগতে জগৎ জোড়া নাম যাঁর, ভারতের গর্ব যিনি, গোয়ার সেই ভূমিপুত্র লিয়েন্ডার পেজকেই তৃণমূলে আনলেন মমতা।

এদিন লিয়েন্ডার পেজকে পাশে নিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মানুষের ওপর আমরা আস্থা রাখছি। এই বছরটা নতুন সকালের বছর হোক। গোয়া এখন খুবই অবহেলিত। আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি রাখব। দিল্লির লাড্ডু চলবে না। দিল্লির দাদাগিরিও চলবে না। গোয়ার মানুষই গোয়া চালাবে। আমরা রূপরেখা তৈরি করে দেব।”

তৃণমূলে যোগ দিয়ে লিয়েন্ডার পেজ বলেন, “দিদি আমাকে যে সুযোগ দিয়েছেন তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমি যখন দেশের হয়ে টেনিস খেলেছি, সেই সময় দিদি ক্রীড়া মন্ত্রী ছিলেন। খুবই উৎসাহ দিতেন, খুবই এনকারেজিং তিনি। আমার দেশের জন্য গত ৩০ বছর বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। দেশের হয়ে টেনিস খেলেছি। এখন টেনিস থেকে অবসর নেওয়ার পর এবার রাজনীতির মাধ্যমে আমি মানুষের জন্য, দেশের জন্য কাজ করতে চাই।” লিয়েন্ডারের কথায়, “দিদি প্রকৃত চ্যাম্পিয়ন। ওনার নেতৃত্বে কাজ করব সত্যিই আনন্দের। ধর্ম-বর্ণ-জাতির ভেদাভেদ নয়, আমার দেশ গণতন্ত্রের সংস্কৃতি ঐতিহ্যে বিশ্বখ্যাত হবে এটাই চাই। আমিও এই জয়যাত্রার অংশী হতে চাই।”

এদিন সত্যিই সকলকে চমকে দিয়েছে লিয়েন্ডার পেজের রাজনীতিতে পা রাখা। কারণ লিয়েন্ডার পেজ শুধু বাংলা বা গোয়ার মুখ নন, সারা ভারতকে তিনি প্রতিনিধিত্ব করেছেন বিশ্বের দরবারে। সেই ‘লি’ এবার তৃণমূল কংগ্রেসে। গোয়ায় গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটা তুবড়ি ফাটালেন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। লিয়েন্ডার পেজ সেই নাম যা শিশু থেকে বুড়ো, সকলের কাছেই পরিচিত। এই নাম শুধু জাতীয় স্তরে নয়, আন্তর্জাতিক স্তরেও সমাদৃত।

এর আগে বহু ক্রীড়াবিদ তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন এ কথা সত্যি। কেউ কেউ আবার রাজনীতির ‘মোহ’ কাটিয়ে নিজের জগতেই ফিরে গিয়েছেন। কিন্তু লিয়েন্ডার পেজের মতো ‘হেভিওয়েট’ শুধু তৃণমূল কেন, অন্য কোনও রাজনৈতিক দলেও যাওয়া মানে সে দলের মান এক লাফে অনেকটাই বেড়ে যায়। ভারতীয় টেনিসের এই কিংবদন্তির যোগদানের পর তৃণমূল দাবি করতেই পারে, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে তাদের একটা পরিচিতি তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: ‘যেদিন স্যান্ডো গেঞ্জির পকেট তৈরি হবে, সেদিন প্রধানমন্ত্রী হবেন দিদিমণি’