মালদহ: টাকার অভাবে পড়াশোনাই বন্ধ হতে বসেছিল পায়েল রহমানের। পরিযায়ী শ্রমিক, যাঁদের দিন আনা-দিন খাওয়া সংসার, সেই পরিবারের পক্ষে মেয়েকে ডাক্তারি পড়ানোর আর্থিক খরচ জোগানো বেশ কঠিন ছিল। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের (NRS Medical College) সেই ছাত্রীকে সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দিলেন তৃণমূল বিধায়ক। জেলায় জেলায় যখন ‘দিদির দূত’ কর্মসূচিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে তৃণমূল বিধায়কদের, তখন উল্টো ছবি ধরা পড়ল মালদহে। পায়েল রহমানের পড়াশোনার খরচ জোগানোর ভার নিলেন বিধায়ক রহিম বক্সি। মালদহের রতুয়ার ২ ব্লকের মহারাজপুর গ্রামের বাসিন্দা পায়েল এই সাহায্য পেয়ে খুশি। তিনি জানিয়েছেন, বিধায়ক যে তাঁকে এতটা সাহায্য করবেন, তা তিনি ভাবতে পারেননি।
বরাবরই মেধাবী ছাত্রী হিসেবে পরিচিত ছিলেন পায়েল। মেডিক্যালের প্রবেশিকা ‘নিট’ (NEET) পরীক্ষায় ভালো র্যাঙ্ক করেছিলেন তিনি। প্রথমবার উত্তরবঙ্গে ডেন্টাল কলেজে পড়ার সুযোগ পান। পরে সেই সুযোগ ছেড়ে দিয়ে আবারও পরীক্ষা দেন পরের বছর। সেবারই সুযোগ পান এনআরএস মেডিক্যাল কলেজে। বর্তমানে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তিনি। বহু কষ্টে এতদিন পর্যন্ত পড়াশোনার খরচ সামলেছে শ্রমিক পরিবার। কিন্তু দারিদ্র্য এতটাই যে এরপর ডাক্তারি পড়া প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছিল। এতদূর এগিয়ে গিয়েও স্বপ্ন প্রায় অধরাই থেকে যাচ্ছিল পায়েল রহমানের।
সম্প্রতি ‘দিদির দূত’ হয়ে মালতীপুর বিধানসভা এলাকায় যান বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সী। সেখানেই পায়েল যোগাযোগ করে তাঁর সঙ্গে। তাঁর কথা শুনে পড়াশোনা যাতে বন্ধ না হয়ে যায় সেই ব্যবস্থা করে দেন আব্দুর রহিম বক্সী। নিজেই দায়িত্ব নেন বিধায়ক। তিনি একটি ল্যাপটপ তুলে দিলেন ওই ছাত্রীর হাতে। মাসে মাসে ৫ হাজার টাকা করে সাহায্য করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
পায়েল রহমান বলেন, এই সাহায্য পেলে অনেক উপকার হবে। ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে যেতে পারব। বিধায়ক যে আমাকে এতটা সাহায্য করবেন, আমি ভাবিনি। বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সী জানান, পায়েল যাতে ডাক্তারি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন, সে জন্য প্রতি মাসে নিজের বিধায়ক ভাতা থেকে সহযোগিতা করবেন তিনি।