
মালদহ: বিশেষ নিবিড় সমীক্ষায় (SIR) বুথ লেভেল অফিসারদের (BLO) ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বিজেপির বক্তব্য, অনেক বিএলও-ই তৃণমূলের সদস্য। ফলে তাঁদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে গেরুয়া শিবির। এই অবস্থায় মালদহের মানিকচকে তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যের নাম সামনে এল, যিনি বিএলও-র দায়িত্ব পালন করছেন। তৃণমূলের ওই পঞ্চায়েত সদস্যর নাম মতিউল আনসারি। তিনি মানিকচকের এনায়েতপুরে শ্যামপুর প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। তাঁকে বিএলও করা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। মতিউলকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি জানিয়েছে সিপিএম।
মতিউল আনসারি এনায়েতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। তিনিই আবার এনায়েতপুরে ১৫৬ নম্বর বুথের বিএলও। এই নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর টিভি৯ বাংলার প্রতিনিধি তাঁর স্কুলে পৌঁছে যান। সেই স্কুলে তৃণমূল নেতার বক্তব্য নিতে গিয়ে কার্যত হুমকির মুখে পড়তে হয়। প্রথমে স্কুলের প্রধান শিক্ষক জিব্রায়েল শেখ জানান, ওই তৃণমূল নেতা স্কুলেই আসেননি। বাড়িতে আছেন। পরে স্কুলের ভিতরে পাওয়া গেল মতিউল আনসারিকে।
মতিউল প্রথমে টিভি৯ বাংলার বুম ঠেলে সরিয়ে সেখান থেকে সরে যেতে চাইছিলেন। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, “আপনি কি তৃণমূলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও বিএলও?” তাঁর জবাবে মতিউল বলেন, “আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না।” বারবার একই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “অফিসে যান, আমি যাচ্ছি।” কিন্তু, TV9 বাংলার প্রতিনিধি অফিসে অপেক্ষা করলেও তিনি আর আসেননি।
ওই বিএলও-কে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি জানিয়ে বিডিও-কে চিঠি দিয়েছে সিপিএম। বাম এই দলের মানিকচকের আহ্বায়ক দেবজ্যোতি সিনহা বলেন, “বিএলও নিয়োগ করেন বিডিও। বিডিও অফিস থেকে যে তালিকা দেওয়া হয়েছে, সেখানে দেখা গিয়েছে, তৃণমূলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি বিএলও। তৃণমূলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যদি বিএলও-র দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে গোটা প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সেজন্য আমরা দাবি জানিয়েছে, ওই শিক্ষককে সরিয়ে অন্য কাউকে বিএলও-র দায়িত্ব দিতে হবে।” শাসকদলের সদস্য বিএলও হলে কারচুপিও হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পিঙ্কি মণ্ডল বলেন, “নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হলে বিএলও হওয়ার কথা নয়। বিডিও-র সঙ্গে আলোচনা করে সেখানকার বিএলও বদলানো হবে।” তবে বিরোধীদের অভিযোগ খারিজ করে দেন তিনি।
এদিকে, BLO-দের হুঁশিয়ারি দিয়ে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “তৃণমূলের কথা, বিজেপির কথা শুনবেন না। কেবল নির্বাচন কমিশনের কথা শুনবেন। বিহারের ৫২ জন BLO কিন্তু এখনও জামিন পাননি। আপনাদের কিন্তু জেলে কাটাতে হবে।”