Tv9 Bangla Reporter attacked: যেন সব্যসাচী! নার্সিংহোমের মালিক, দালালচক্রের পাণ্ডা আনারুলের ‘ঠিকুজী-কুষ্ঠি’ ফাঁস করল TV9 বাংলা

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Dec 05, 2021 | 10:37 PM

Malda: নার্সিংহোম মালিক আনারুল কালিয়াচকের সুজাপুরের বাসিন্দা। জমির দালালি করে কাঁচা পয়সার মালিক তিনি

Tv9 Bangla Reporter attacked: যেন সব্যসাচী! নার্সিংহোমের মালিক, দালালচক্রের পাণ্ডা আনারুলের ঠিকুজী-কুষ্ঠি ফাঁস করল TV9 বাংলা
আনারুল হক, নিজস্ব চিত্র

Follow Us

মালদা: ভিমরুলের চাকে ঢিল পড়তেই প্রতিহিংসা! অ্যাম্বুলেন্সের দালাল চক্রের খবরের পর্দাফাঁস হতেই হামলা। খবর করতে গিয়ে আক্রান্ত TV9 বাংলা। মালদার ইংরেজবাজারে আমাদের রিপোর্টার, চিত্র সাংবাদিকের উপর হামলা। দুষ্কৃতীরা ঘিরে ধরে বেধড়ক-বেধড়ক মার মারে তাঁদের। ভাঙচুর করা হয় ক্যামেরা, বুম। কাদের ছত্রছায়ায় এই দুর্নীতি?এই দুর্নীতির শিকার কতদূর? মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়েই আক্রান্ত TV9 বাংলা। অবশেষে ফাঁস হল দালালচক্রের পাণ্ডা আনারুলের ‘কুকীর্তি’। ফাঁস করল সেই TV9 বাংলাই।

কে এই আনারুল হক? নার্সিংহোমের ব্যবসা ফেঁদে বসেছেন যে লোকটা, তাঁর টিকি কোথায় বাঁধা? কাদের সঙ্গে আনারুলের ওঠাবসা? সব তথ্য খুঁজে বের করেছে TV9 বাংলা। পুরো নাম আনারুল হক। ইংরেজ বাজারের অ্যাপোলো নার্সিংহোমের মালিক। নিজের নার্সিংহোমের সামনে দালাল আর গুন্ডাদের লেলিয়ে দিয়েছিলেন আনারুল। তাঁর নির্দেশেই বেপরোয়া গুন্ডাবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়েছে TV9 বাংলার প্রতিনিধি শুভতোষ ভট্টাচার্য ও শাম্ব সাহার ওপর। আনারুলের অপরাধের রেকর্ড বেশ পুরোনো। চল্লিশ পার করা আনারুল অনেকদিন ধরেই মালদার আন্ডারওয়ার্ল্ডের চেনা নাম। নার্সিংহোমের ব্যবসার পিছনে রয়েছে অসংখ্য কীর্তি।

নার্সিংহোম মালিক আনারুল কালিয়াচকের সুজাপুরের বাসিন্দা। জমির দালালি করে কাঁচা পয়সার মালিক তিনি।কালিয়াচকে মাফিয়া হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে আনারুলের। নিজ এলাকায় যথেষ্ট প্রভাব ও প্রতাপশালী। কালিয়াচকে মার্বেলের ব্যবসাও শুরু করেন আনারুল। কিন্তু অল্পে মন ভরছিল না। অতএব, জালিয়াতির আরও গভীরে নিমজ্জন। ধীরে ধীরে জেলায় সিন্ডিকেটের অন্যতম মাথা হয়ে ওঠেন আনারুল। অন্ধকার জগতে তখন থেকেই ওঠাবসা।

সুজাপুর ছাড়াও মালদহ শহরের কাছে যদুপুরে আনারুলের আরও একটি বাড়ি। মালদহ শহরের মকদমপুরেও বাড়ি রয়েছে তাঁর। এছাড়াও গোটা জেলা জুড়ে বেনামে রয়েছে প্রচুর সম্পত্তি। নার্সিংহোমের ব্যবসা ফেঁদে বসার পর রাজনৈতিক নেতাদের হাতে রাখতে শুরু করেন আনারুল। জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার ‘প্রিয়পাত্র’ তিনি। ধীরে ধীরেই নিজের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছেন আনারুল।

কেন সামনে এল আনারুলের নাম? কী থেকে এই ঘটনার সূত্রপাত? খবরের সূত্রপাত হয় মালদায়। গত ৩ ডিসেম্বর মালদার একটি বেসরকারি হাসপাতালে কন্য়া সন্তানের জন্ম দেন এক প্রসূতি। কিন্তু সেই সময় হাসপাতালের তরফ থেকে দাবি করা হয় যে কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্যই তাঁর স্বামী ও পরিবার তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন।

কিন্তু ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই মিথ্যা প্রমাণিত হয় সেই ঘটনা। সত্যি ঘটনা সামনে আনে টিভি ৯ বাংলা। দক্ষিণ দিনাজপুরের পতিরামে পৌঁছায় টিভি ৯ বাংলার প্রতিনিধি রূপক সরকার। সেখানেই ওই মহিলার বাড়ি।

তখন ওই মহিলা জানান যে, কন্যা সন্তান হওয়ার জন্য নয়, হাসপাতালের আকাশ সমান বিল মেটাতেই ভিনরাজ্যে কাজের জন্য পাড়ি দিয়েছেন তাঁর স্বামী। মহিলার বয়ান অনুযায়ী, তারা প্রথমে মালদায় সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে ওঠে। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স চালক ওই বেসরকারি হাসপাতালের সামনে গাড়ি দাঁড় করিয়ে বলেন গাড়িটি খারাপ হয়ে গিয়েছে। এই নার্সিংহোমে ভর্তি করতে কারণ এখানকার পরিষেবা ভালো।

ওই সময় কোনও কিছু বিচার না করেই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন ওই মহিলা। এরপর আইসিইউ-তে তাঁর বিল হয় ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। এত টাকা দেখে ওই মহিলার স্বামী মাথায় হাত দিয়ে বসে পরেন। গরিব পরিবার কোথা থেকে পাবেন এত টাকা? মোট কুড়ি হাজার টাকা জমা দিয়ে বেরিয়ে যান বাকি টাকা রোজগার করতে।

এই ভাবে কেটে যায় প্রায় কুড়ি দিন। এদিকে, মহিলার অভিযোগ হাসপাতালের আয়ারা তাঁকে বোঝাতে শুরু করেন যে কন্যা সন্তান হওয়ার জন্যই তার স্বামী তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়ছেন।

সূত্রের খবর, এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবে খবর পায় যে এতদিন রোগীকে হাসপাতালে রাখায় তার পরিবারের সদস্যরা হাসপাতাল ভাঙচুর করতে আসছে। সেই খবর পাওয়া মাত্রই সত্বর তারা যোগাযোগ করে পুলিশের সঙ্গে মকুব করে দেয় তিনলাখের বিল। ছেড়ে দেওয়া হয় মহিলাকে। মালদা ও দক্ষিণদিনাজপুরের পুলিশের সহায়তায় মহিলা পৌঁছায় বাড়িতে।

কিন্তু দিনাজপুরের দুস্থ আদিবাসী প্রসূতিকে কেন নিয়ে আসা হল মালদার ওই বেসরকারি হাসপাতালে? সেই উত্তর খুঁজতে গিয়েই ঝুলি থেকে বেরিয়ে এল বিড়াল। জানা গেল, সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার লাগাম ছাড়িয়ে নার্সিংহোমের ক্ষপ্পরে পড়ল আদিবাসী পরিবার।

এই বিষয়ে জখম হওয়া আমাদের প্রতিনিধি শুভতোষ ভট্টাচার্য জানান, “মালদায় রমরমিয়ে চলছে দালাল চক্র। যারা এই ভাবে অ্যাম্বুলেন্সে করে অসুস্থ রোগীদের বিভিন্ন কারসাজি করে বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করে দেন। আর তারপরই সেই নার্সিংহোম আকাশ সম বিল করে রোগীর পরিবারের হাতে ধরিয়ে দেয়। এই সকল বিষয়ে তথ্য পাওয়ার পর আমরা যখন বেসরকারি ওই হাসপাতালটিতে পৌঁছালাম সেই সময় হাসপাতালের স্টাফ সেজে থাকা দুষ্কৃতী আমাদের উপর হামলা চালায়। হাত থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে আমাদের চিত্র সাংবাদিককে। আমি বাঁচাতে গেলে আক্রমণ করা হয় আমাকেও। এই দুষ্কৃতীদের যে খবর আমরা পেয়েছি তা হল এরা বিভিন্ন সমাজ বিরোধী কাজের সঙ্গে সরাসরি লিপ্ত।”

আরও পড়ুন: Sukanta Majumder on Attack on TV9 Bangla: ‘জীবন নিয়েও সিন্ডিকেট চলে, ভাগ পায় তৃণমূল…গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর’

 

Next Article