মালদহ: মধ্যযুগীয় বর্বরতা শুধু বইয়ের পাতাতেই আটকে নেই। এখনও বিভিন্ন জায়গায় সেই অমানবিক নৃশংসতার ছবি দেখা যায়। যেমন সম্প্রতি দেখা গেল মালদহের (Maldah) চাঁচল থানা এলাকার এক গ্রামে। বিধবা ওই যুবতী চরিত্রহীন অভিযোগ তুলে ভয়াবহ ঘটনা ঘটালেন গ্রামের লোকেরাই। গ্রামে বসল খাপ পঞ্চায়েত। চুল কেটে, কপালে ব্লেড ও সুচ দিয়ে লিখে দেওয়া হল ‘৪২০’। এই ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশের দাবি, তাদের কাছে কোনওরকম অভিযোগ আসেনি। ফলে তারা কোনও পদক্ষেপ করতে পারেনি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, চাঁচল থানা এলাকার ওই যুবতীর বছর দু’য়েক আগে স্বামীকে হারান। স্বামী মারা যাওয়ার পর দুই মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতেই থেকে গিয়েছিলেন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, কয়েক মাস ধরে বেশ কয়েকজন অপরিচিত পুরুষের সঙ্গে কথাবার্তা বলা শুরু করেন ওই যুবতী। সম্পর্কও গড়ে ওঠে বলে অভিযোগ তোলেন এলাকার লোকেরা।
অভিযোগ, এরপরই ওই যুবতীর জন্য সালিশিসভা বসানো হয় গ্রামে। বিচারক গ্রামের মোড়লরা। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, মেয়েটিকে আগে বেশ কয়েকবার সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। এরপরই সকলে মিলে ঠিক করেন, মেয়েটিকে কঠিন শাস্তি দিতে হবে। অভিযোগ, মাথার চুল কেটে, কপালে ৪২০ লিখে দেওয়া হয়। সেই লেখা লিখতে গিয়ে রক্তাক্ত হতে হয় যুবতীকে।
এ প্রসঙ্গে মালতিপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সীর বক্তব্য, “মহিলার উপর এই অত্যাচারের ঘটনার ন্যক্কারজনক। স্থানীয় প্রধানের সঙ্গে কথা বলব। পুলিশ প্রশাসন আইনগত পদক্ষেপ করবে। কোনও মহিলার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে এভাবে আইন হাতে তুলে নেওয়া ঠিক নয়। তার জন্য পুলিশ রয়েছে।”
তবে পুলিশের দাবি, ওই মহিলা কোনও অভিযোগ জানাতে রাজি হননি। অত্যাচারের ঘটনার পর গ্রামবাসী ফের সালিশি সভা করে বিষয়টির মীমাংসা করেন। অভিযোগ না পাওয়ায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। অন্যদিকে এই ঘটনা নিয়ে বিজেপি নেতা অম্লান ভাদুড়ির বক্তব্য, “রাজ্যের পরিস্থিতি কী তা এই ঘটনায় স্পষ্ট। এখানে মহিলাদের নিরপত্তা নেই। নির্যাতন, ধর্ষণ, খুন লেগেই রয়েছে। ওদিকে কার্নিভাল করে বিজয়া চলছে।”