পুরুলিয়া: পুরুলিয়ার প্রশাসনিক বৈঠকে সোমবার কড়া মেজাজে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ঘোষিত বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে বিলম্ব নিয়ে নিজের হতাশা গোপন করেননি। সরকারি আধিকারিকদের ‘দুলকি চালে’ কাজ করার মানসিকতা থেকেও বেরিয়ে আসতে বলেছেন তিনি। এর পাশাপাশি ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের বেনিময় নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী যখন এ সব কথা বলছিলেন তখন স্বাভাবিক ভাবেই জড়সড় হয়ে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদারকে। কেন তিনি নীচু তলার কর্মীদের এ ধরনের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না, সে প্রশ্নও এ দিনের প্রশাসনিক বৈঠকে শুনতে হয়েছে জেলাশাসককে। তৃণমূলের কোনও কর্মী এই ধরনের কাজ করলে তিনি কী ব্যবস্থা নিতেন সে কথাও বুঝিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবারের বৈঠকে মিউটেশনের পর্ব শেষ হতেই বৈঠকে উপস্থিতদের অভিযোগ শুনতে চান মুখ্যমন্ত্রী। জেলা প্রশাসনের কাজকর্মে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রীকে তৃণমূলের এক নেতা অনুযোগ করেন, স্থানীয় ইটভাটা থেকে যে সরকারি অর্থ আদায় হয়, তার হিসেব পাওয়া যায় না। সেই টাকার একটা অংশ নাকি কয়েক জন পকেটে ভরেন।
এই অভিযোগ পেয়েই ফের বেরিয়ে পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া মেজাজ। তখন মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন জেলাশাসককে। উদ্বেগের গলায় মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ডিএম শুনতে পাচ্ছো? এগুলো কিন্তু তৃণমূল করেনি। করছে প্রশাসনের নীচের তলার কর্মীরা।’’ এর পরই তাঁর সংযোজন, ‘‘নিজেরা টাকাটা নেয়, নিজেরাই খেয়ে নেয়! কী জেলা চালাচ্ছ তুমি (জেলাশাসক)? এত দিন জেলায় আছো।’’ এখানেই থামেননি মমতা। হতাশার সুরে তিনি বলে ওঠেন, ‘‘এত কিছু দিচ্ছি মানুষকে, তবু কয়েক জন এত লোভী কেন হয়ে গিয়েছে। আর কত চাই?” এর পরই সরকারি টাকা নিজের পকেটে ভরা ব্যক্তিদের শায়েস্তা করতে মমতা মেজাজ চড়িয়ে বলেন, “ আমার পার্টির লোক হলে আমি টেনে চারটে থাপ্পড় মারতাম। তাদের আমি সব সময় শাসন করি।’’
দু্র্নীতির সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা কেমন হওয়া উচিতও তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, “আমি এখানে আলোচনা করছি, তখনই পুলিশ চলে যাবে। তদন্ত শুরু দেবে। দ্রুত কাজ করতে হবে।”