মেদিনীপুর: মেয়েকে বাঁচানোর কাতর আর্জি জানিয়ে মন্ত্রীর পা ধরেছিলেন বাবা। তবে শেষ রক্ষা হল না। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই মৃত্যু হল ১৩ বছরের কিশোরীর। রবিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ তার মৃত্যু হয়। তারপর থেকেই চাপা উত্তেজনা দেখা দেয় হাসপাতাল চত্বরে। যে চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করেছেন, তাঁকে সামনে আসার দাবিতে সরব হয়েছেন মৃতের পরিবারের লোকজন। ওই চিকিৎসক না আসা পর্যন্ত দেহ নেবে না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
যদিও নাবালিকার মৃত্যুর পর ঘণ্টা দুয়েক পার হয়ে গেলেও ওই চিকিৎসক দূরস্ত, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কারও দেখা মেলেনি। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন মৃতের পরিবারের লোকেরা। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে হাসপাতাল চত্বরে মোতায়েন হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। রয়েছেন কোতয়ালির আইসি থেকে অ্যাডিশনাল এসপি (হেড কোয়ার্টার্স) ডিএসপি। মেদিনীপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খানও ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। তবে এই ঘটনা নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে নারাজ। পাশাপাশি তৃণমূল থেকে বিজেপির কয়েকজন প্রতিনিধিও হাসপাতাল চত্বরে উপস্থিত হয়েছেন। যদিও কেউ কোনও মন্তব্য করতে নারাজ। সবমিলিয়ে, চাপা উত্তেজনা দেখা দিয়েছে হাসপাতাল চত্বরে।
প্রসঙ্গত, পশ্চিম মেদিনীপুরের কলগাং এলাকার বাসিন্দা রিঙ্কু রায়ের মেয়ে সুপ্রিয়া রায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। ১৩ বছর বয়সি সুপ্রিয়া গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। তার অ্যাপেনডিক্স ধরা পড়েছিল। অভিযোগ, ওই দিনই কোনও শারীরিক পরীক্ষা না করিয়ে সোজা অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয় সুপ্রিয়াকে। তার পরিবারের অভিযোগ, অস্ত্রোপচারের পর নাবালিকার রক্তপাত হতে শুরু করে। সেই রক্তপাত বন্ধ না হওয়ায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে রোগী। তারপরে তাকে আইসিইউ-তে স্থানান্তর করা হয়। এরপর এদিন কাকতালীয়ভাবে বিশেষ কাজে হাসপাতালে যান রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। তাঁকে দেখতে পেয়েই কাঁদতে-কাঁদতে তাঁর পায়ে পড়ে মেয়েকে বাঁচানোর কাতর আর্জি জানান নাবালিকার বাবা। যদিও মন্ত্রী বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। তবে, বাঁচানো গেল না কিশোরীকে। মেয়েকে হারিয়ে কার্যত নির্বাক হয়ে গিয়েছেন বাবা।