মুর্শিদাবাদ: হাজারও বিতর্ক, জলঘোলার পর তাঁর শপথগ্রহণ। কিন্তু বিধানসভায় শপথ নেওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই বিতর্কে জড়ালেন ভগবানগোলার নব নির্বাচিত বিধায়ক রেয়াত হোসেন। একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে, (ভিডিয়োর সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি TV9 বাংলা) তাতে দেখা যাচ্ছে রেয়াত হোসেন তাঁর দলীয় কর্মীদের বলছেন, “যতটা পারব আমরা বিরোধী পঞ্চায়েত সদস্যদের কাজ না দেওয়ার চেষ্টা করব। যদি কাজ না দিই, তাহলে এলাকার উন্নয়ন হবে না। তাহলে ভোট পাবে না।” বিরোধী পঞ্চায়েত সদস্যদের রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা করে রাখার বার্তা দিচ্ছেন তিনি। এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে ভগবানগোলায়। সোচ্চার বিরোধীরাও।
বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে তাঁর শপথগ্রহণ নিয়ে টালবাহানা চলতে থাকে। চলতি মাসের ৫ তারিখ সেই পর্বে যবনিকাপতন হয়। বিধানসভায় বিধায়ক হিসাবে শপথ নেন রেয়াত। দু’দিন আগেই ভগবানগোলা নবনির্বাচিত বিধায়ক রেয়াত হোসেন একটি পথ সভায় যোগ দেন। উপস্থিত ছিলেন গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কয়েক জন সদস্য। মাইক হাতে বক্তৃতা রাখছিলেন রেয়াত হোসেন। সেই বক্তৃতাই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে রেয়াত বলছেন, “আমার এখানে পঞ্চায়েতে যখন কাজ ভাগ করা হবে, আমি পরিষ্কার কথা বলছি, যতটা পারি, আমরা বিরোধী সদস্যদের কাজ না দেওয়ার চেষ্টা করব। রাজনৈতিকভাবে আমরা কোণঠাসা করে রাখার চেষ্টা করব। ওদের যদি কাজ না দিই, তাহলে এলাকার কাজ হবে না। আর কাজ না হলে ওরা ভোটও পাবে না। এই পলিটিক্সটা আমরা করি।” বিরোধীদের বক্তব্য, রেয়াত হোসেন এই ভাবেই কর্মীদের সংগঠনের পাঠ পড়াচ্ছিলেন।
উল্লেখ্য, ভগবানগোলা বিধানসভায় দুটো ব্লক রয়েছে। ভগবানগোলা ১ ও ২। দুটো ব্লকে মোট ১৪ গ্রাম পঞ্চায়েত। তার মধ্যে চারটি বাম-কংগ্রেস জোটের, আর ১০টি তৃণমূলের দখলে। তৃণমূলের পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে আগেও একাধিকবার পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। কিন্তু রেয়াতের এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর স্বাভাবিকভাবেই সোচ্চার বিরোধীরা। ভগবানগোলা ১ নম্বর ব্লকের কংগ্রেস সভাপতি আব্দুল রজ্জাক বলেন, “আমার কাছে খবর আছে, তৃণমূল বিধায়ক সম্ভবত চরে জয়েনিং করাতে গিয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, যেহেতু আমি শাসকদলের বিধায়ক, তাই যেখানে আমাদের পঞ্চায়েত রয়েছে, পঞ্চায়েত সমিতি রয়েছে, সেখানে আমরা বিরোধীদের কোনও কাজ দিচ্ছি না। ভগবানগোলার বড় অঞ্চলের প্রধান সাবির আহমেদও ঠিক এই কাজটাই করেন। সেই উদাহরণ দেন রেয়াত হোসেন। সিপিএম-কংগ্রেসের জোটের যে জায়গাগুলো আছে, তাঁদের চোর বানাচ্ছে। ওদের পাঁচটা আসন রয়েছে, তাই এই পদ্ধতিতে রাজনীতিটা করছে। ওঁ মূর্খের মতো কথা বলছেন।” বিজেপি নেতা সজল ঘোষের বক্তব্য, “দুঃসাহসিক হয়ে উঠছেন ওঁরা। এটাই তো ওঁদের কাজ। সেটা তো সবার জানে। প্রকাশ্যে চলে এসেছে।” যদিও এই ভিডিয়ো প্রসঙ্গে রেয়াত হোসেনের আর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।