মুর্শিদাবাদ: বঙ্গ উপনির্বাচনে রেকর্ড জয় হয়েছে তৃণমূলের। রীতিমতো বিধ্বস্ত বিজেপি। ধারেকাছেই কার্যত ঘেঁষতে পারেনি বাম-কংগ্রেস শিবির। কিন্তু, চার কেন্দ্রের উপনির্বাচনে (By-Election) বিজেপির ভরাডুবি নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, উপনির্বাচনে ইভিএম বদল করা হয়েছে। কারও নাম না করলেও এ ক্ষেত্রে শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) অভিযোগের আঙুল শাসকদলের দিকেই। সেই অভিযোগের কার্যত বিপক্ষে দাঁড়িয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে কটাক্ষ করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধু্রী (Adhir Ranjan Chaudhury)।
সাংবাদিক বৈঠকে অধীর বলেন, “স্বীকার করতে তো দোষ নেই। আমরা তো হেরেছি। সে কথা স্বীকার করতে তো দোষ নেই। এখন নাচ না জানলে উঠোন ব্যাঁকা! আমি তৃণমূলের পক্ষে বলছি না। কিন্তু, এইটুকু বলতে পারি, বাংলার মানুষ একটি ধর্মনিরপেক্ষ দলকে নির্বাচন করেছে। হ্য়াঁ, সেটা কংগ্রেস নয়। তৃণমূল। ঠিক আছে। চেষ্টা করব, হারানো জমি ফিরিয়ে আনার। আর যে বা যাঁরা এমন কথা বলছেন তাঁদের অনেক কিছু রয়েছে। দিল্লি রয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে। অনেক অনেক কিছু রয়েছে।”
প্রসঙ্গত, উপনির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি নিয়ে শুভেন্দু দাবি, উপনির্বাচনে ইভিএম বদল করা হয়েছে। কারও নাম না করলেও এ ক্ষেত্রে শুভেন্দুর অভিযোগের আঙুল শাসকদলের দিকেই। একই সঙ্গে তিনি বলেন, একটা দল ১০০ শতাংশের মধ্যে ৮৬-৮৭ শতাংশ ভোট পাচ্ছে। সমস্ত ভোটের মেশিন বদলেছে। বোঝাই যাচ্ছে, এ ভাবে পতনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
সম্প্রতি গোসাবা, খড়দহ, দিনহাটা এবং শান্তিপুরে বিধানসভার উপনির্বাচন ছিল। খড়দহ, দিনহাটা, গোসাবায় জমানত জব্দ হয়েছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের। কিছুদিন আগেই আইসিসিআরে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী এই উপনির্বাচন প্রসঙ্গে বলে, “উপনির্বাচনে ইভিএম বদল করা হয়েছে। সবজায়গাতেই এটা হয়েছে। আমরা যা ব্যবস্থা নেওয়ার নিচ্ছি।”
এ প্রসঙ্গে উদাহরণ টানতে গিয়ে আরও এক ধাপ এগিয়ে নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক অভিযোগ তোলেন, গোসাবা বিধানসভা কেন্দ্রে বেহালা পূর্বের ইভিএমের গণনা হয়েছে। বিরোধী দলনেতার দাবি, এ সংক্রান্ত অভিযোগ তিনি স্থানীয় নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে পেয়েছেন।
এদিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “৮৬-৮৭ শতাংশ একটা দল পায়? আরে সমস্ত ভোটের মেশিন পাল্টেছে। বেহালা পূর্বের মেশিন গোনা হয়েছে বেহালায়। আমরা বুথ ধরে দেখছি তো। শান্তিপুর কলেজ বুথ। ৪৭৮ তৃণমূল কংগ্রেস, ৮ বিজেপি। ওই বুথে ওয়ার্ড প্রেসিডেন্ট, শক্তিকেন্দ্র প্রমুখ-সহ ২০ জন বিজেপির কর্মী আছে। তাঁদের বাড়ির ভোট ৯২ টা। তাঁরা বলছেন, তা হলে কি আমাদের বাড়ির লোক ভোট দেয়নি? এই যে ৮৬-৮৭ শতাংশ ভোট গণতন্ত্রের পক্ষে খুব বিপজ্জনক।”
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “এসব পাগলের অভিযোগ। কেন্দ্রে ওনাদের নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোট হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী পাহারা দিয়েছে। উনি ওখানে গিয়ে বলুন না। এই যে গোহারা হেরেছেন। উনি মুখ দেখিয়েছেন যেখানে যেখানে, সেখানে যে বিপর্যয় হয়েছে, সেটা ঢাকতে পাগলামির তো একটা সীমা থাকবে। কেন্দ্রের নির্বাচন কমিশন, কেন্দ্রীয় বাহিনী। ওনাদের নেতারাই তো কথায় কথায় বলেন, ‘কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বলছি বুক লক্ষ্য করে গুলি করুন, ওমুক লক্ষ্য করে গুলি করুন।’ বড় বড় কথা বলার সময় খেয়াল থাকে না।”
আরও পড়ুন: Joy Saha: ছটপুজোর সামগ্রী দানে ‘সরকারি সন্ত্রাসের’ শিকার বিজেপি নেতা!