Post Poll Violence: মামলা রুজুর পরেই নাবালিকা ধর্ষণ-কাণ্ডে দ্বিতীয়বার নবগ্রামে ‘স্পটভিজিট’ সিবিআইয়ের

CBI: নির্যাতিতার বাড়িতে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই  কর্তারা। ওই নাবালিকার বয়ান নেওয়ার পাশাপাশি, আশেপাশের এলাকাবাসীর সঙ্গেও কথা বলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দার চার সদস্যের ওই বিশেষ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা

Post Poll Violence: মামলা রুজুর পরেই নাবালিকা ধর্ষণ-কাণ্ডে দ্বিতীয়বার নবগ্রামে 'স্পটভিজিট' সিবিআইয়ের
হিংসা তদন্তে সিবিআই, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 16, 2021 | 3:14 PM

মুর্শিদাবাদ: রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার (Post Poll Violence) তদন্ত চলছে পুরোদমে। অভিযোগের ভিত্তিতে জেলায় জেলায় গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি এফআইআর দায়ের হয়েছে। পাশাপাশি ধড়পাকড়ও চলছে। গতকাল অর্থাত্‍ সোমবারই প্রথম ভোট পরবর্তী হিংসায় ধর্ষণের চেষ্টার মামলা রুজু করে সিবিআই। মুর্শিদাবাদের এক নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনায় এই মামলা রুজু করা হয়। মঙ্গলবার সেই কান্দির উগ্র ভাটপাড়া গ্রামে ‘স্পট ভিজিট’-এ এলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দার বিশেষ প্রতিনিধি দল।

এদিন, নির্যাতিতার বাড়িতে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই  কর্তারা। ওই নাবালিকার বয়ান নেওয়ার পাশাপাশি, আশেপাশের এলাকাবাসীর সঙ্গেও কথা বলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দার চার সদস্যের ওই বিশেষ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। ঘুরে দেখেন গোটা এলাকা। মঙ্গলবার, নাবালিকার পরিজনেকর সঙ্গে কথা বলার পর তার মামার বাড়ি নবগ্রামের রায়েন্ডি গ্রামে আসেন তদন্তকারীরা। সেখান থেকে নিগৃহীতারপরিবারের সদস্য এবং দুজন প্রত্যক্ষদর্শীকে সঙ্গে নিয়ে অমৃতকুণ্ড গ্রামে ঘটনাস্থলে পৌঁছন তাঁরা। চলে ঘটনার পুনর্নিমাণ। সেখান থেকেই খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।

গত ৯ মে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার অনন্তপুর গ্রামে কয়েক জন দুষ্কৃতীর হাতে ধর্ষিত হয় কান্দি থানার উগ্র ভাটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এক নাবালিকা এমনই অভিযোগ ওঠে। এক বান্ধবীর সঙ্গে ওই নাবালিকা যখন সাইকেলে বাড়ি ফিরছিল, তখন কয়েক জন যুবক তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ওই নাবালিকার বান্ধবী কোনও ক্রমে সেখান থেকে পালিয়ে প্রাণ বাঁচান। জানা গিয়েছে ওই নাবালিকা স্থানীয় স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। ধর্ষণের অভিযোগে তিন অভিযুক্তকে পূর্বেই গ্রেফতার করেছিল জেলা পুলিশ। কিন্তু তারপরে পুলিশ আর কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ ওঠে। এমনকী,ওই তিন দুষ্কৃতী জামিনও পেয়ে যায়।

ওই নির্যাতিতা নাবালিকার পরিবারের দাবি,  বারবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়েও কোনও লাভ হয়নি। পরে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই এই মামলা রুজু করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, যে সব মামলার তদন্ত রাজ্য পুলিশ করেনি, সেই ক্ষেত্রেও তদন্ত করতে হবে সিবিআই-কে।

একুশের ভোটের পর রাজনৈতিক হিংসার অভিযোগ উঠেছিল বেশ কয়েকটি। তার মধ্যে বেশিরভাগ অভিযোগই করে বিজেপি। তারা অভিযোগ করে, বহু ক্ষেত্রে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা রয়েছে। শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে মামলা করতে অনীহা দেখিয়েছে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন। এর পর গত ১৯ অগস্ট কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই।

ইতিমধ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সিবিআই এবং সিটকে নতুন করে তদন্তের রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঘরছাড়া রাজনৈতিক কর্মীদের তালিকাও চান বিচারপতি।

ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট আগেই জমা দিয়েছিল রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট। একমাস পুরনো হয়ে গিয়েছে সেই রিপোর্ট। তাই বর্তমানে সেই তদন্ত ঠিক কোন পর্যায়ে রয়েছে, কত দূর এগোল, তা জানতেই নতুন রিপোর্ট চেয়েছে  হাইকোর্ট। সিবিআই তদন্তে জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মোট ৪০ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। তদন্ত এখনও চলছে।

ইতিমধ্যেই এই মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকার আবেদনে জানিয়েছিল, রাজ্যের অনুমতি না নিয়েই তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। এই মর্মে রাজ্য শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। সেই মামলায় কেন্দ্রের তরফ থেকে সুপ্রিম কোর্টে থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সিবিআইকে তদন্তের অনুমতি দেওয়ার বা সিবিআই তদন্ত বন্ধ করে দেওয়ার কোনও ক্ষমতা নেই রাজ্যের।

আরও পড়ুন: Howrah Businessman Murder: দীর্ঘদিন গা-ঢাকা দিয়েছিলেন, অবশেষে ‘ভাই’ সব্যসাচীকে খুনে আদালতে আত্মসমপর্ণ সোমনাথের