মুর্শিদাবাদ: বহরমপুরে ইন্দ্রপতন। ২৫ বছরের সাংসদ তথা দুঁদে রাজনীতিক অধীর চৌধুরীকে ‘ক্লিন বোল্ড’ করে দিলেন তৃণমূলের তারকা-প্রার্থী ইউসুফ পাঠান। কোন মন্ত্রে ইউসুফের জয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। যুক্তি থাকবে বহু। তবে বহরমপুর জয়ে তৃণমূলের যে সমস্ত শক্তি অনুঘটকের কাজ করেছে তার মধ্যে নিঃসন্দেহে রয়েছেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর।
কিন্তু এই হুমায়ুন নিয়ে দল কিন্তু প্রথমে বেশ বিড়ম্বনাতেই পড়েছিল। ইউসুফকে বহরমপুরের প্রার্থী ঘোষণা করার পরই প্রকাশ্যে হুমায়ুন বলেছিলেন, এ প্রার্থী তাঁর নাপসন্দ। নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়াবেন তিনি। হুমায়ুন বলেছিলেন, ‘ইউসুফ পাঠানের বিরুদ্ধে ভোট করব’। স্বভাবতই হুমায়ুনের এমন বক্তব্যে পিলে চমকে উঠেছিল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের। হুমায়ুন যে মুখের কথাকে কাজের কথা করে ফেলতেই পারেন, তা তাঁর দল ভালই জানে। এরপরই শীর্ষ নেতৃত্বকে ময়দানে নামতে হয়েছিল।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হুমায়ুন তো নিজেই লিখেছিলেন, “দলের মনোনীত প্রার্থী ইউসুফ পাঠানকে নিয়ে আমার যে বক্তব্য ছিল সেই বক্তব্য থেকে অনেকটাই সরে আসতে হয়েছে। নেতৃত্বের উপর আস্থা রাখতে গিয়েই সরে আসতে হয়েছে। ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। আমি নেতৃত্বের উপর আস্থা রাখছি। অভিষেককে নেতা মেনে তাঁর ঘোষিত প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য বহরমপুরের সব স্তরের তৃণমূল নেতাদের কাছে আবেদন করছি।”
তবে এরপর ইউসুফের প্রচারপর্বে বারবার হুমায়ুন কবীরকে দেখা গিয়েছে প্রথম সারিতে। ইউসুফকে জেতাতে মাটি কামড়ে থেকেছেন হুমায়ুনও। বলেছিলেন, “৪ জুনের রেজাল্টে অতি চালাকের গলায় দড়ির মতো পরিণতি অধীর চৌধুরীর জন্য অপেক্ষা করছে।” বহরমপুরে রেকর্ড গড়লেন পাঠান। হুমায়ুনও শীর্ষ নেতাদের দেওয়া কথা রাখলেন। বিতর্কিত মন্তব্য করে কমিশনের চিঠি খেয়েছেন ঠিকই, তবে দল বিরোধী কথা বলে দলকে বিড়ম্বনায় ফেলার কোনও ঘটনাই তিনি ঘটাননি। হুমায়ুনকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা বলছেন, এটাই অনেক, বড় স্বস্তি।