
মুর্শিদাবাদ: আর মাস পাঁচেক পর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে মুর্শিদাবাদ জেলা যেন বারুদের স্তূপের উপর রয়েছে। গত তিন সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিনই বোমা উদ্ধার হচ্ছে মুর্শিদাবাদের দুটি পুলিশ জেলায়। গত তিন সপ্তাহে দুই পুলিশ জেলায় উদ্ধার হয়েছে প্রায় দুই হাজার বোমা। মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলায় ১৮০০-র বেশি এবং জঙ্গিপুর পুলিশ জেলায় প্রায় ২০০-র কাছাকাছি বোমা উদ্ধার হয়েছে। শনিবারও সামসেরগঞ্জের জোতকাশী এলাকার আমবাগান থেকে বালতি ভর্তি বোমা উদ্ধার করল জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সামসেরগঞ্জ থানার পুলিশ।
নভেম্বর মাসে মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি টোল ফ্রি নম্বর দেওয়া হয়। ওই টোল ফ্রি নম্বরে বোমা সংক্রান্ত তথ্য জানানোর আবেদন করে জেলা পুলিশ। এরপর থেকেই মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলায় উদ্ধার হতে থাকে বোমা। মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার পাশাপাশি জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার পুলিশও সক্রিয় হয়। দুই পুলিশ জেলা থেকেই উদ্ধার হতে থাকে বোমা। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশি তল্লাশি বাড়ানো হয়।
এদিনও সামসেরগঞ্জের জোতকাশী এলাকার আমবাগান থেকে বালতি ভর্তি বোমা উদ্ধার হয়েছে। বোমা উদ্ধারের পরই জায়গাটি ঘিরে রাখে পুলিশ। খবর দেওয়া হয় বম্ব স্কোয়াডকে। কে বা কারা বোমাগুলি আমবাগানে রেখেছিল, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। এদিন রানিতলাতেও বোমা উদ্ধার হয়েছে। গত ২০ দিনে রানিতলা থানা এলাকা থেকে মোট ৩০টি সকেট ও সুতলি বোমা, পাশাপাশি প্রায় ১ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। শনিবার সকাল থেকে পরিস্থিতি আরও নিবিড়ভাবে খতিয়ে দেখতে স্পর্শকাতর এলাকা হিসেবে পরিচিত রানিতলা থানার নতুনগ্রাম অঞ্চলে বিশেষ তল্লাশি অভিযান শুরু করে পুলিশ। অভিযানে ছিল স্নাইপার ডগ স্কোয়াড এবং মেটাল ডিটেক্টর টিম।
পুলিশ সূত্রে খবর, নির্বাচনের আগে এলাকায় কোনওরকম অশান্তি ছড়ানোর আশঙ্কায় আগেভাগে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি, উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরকের উৎস খুঁজতে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদও চলছে। তবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে এত বোমা উদ্ধারের ঘটনায় আতঙ্ক বাড়ছে। এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে প্রায় ৩০ জনকে। বোমা উদ্ধারের তুলনায় গ্রেফতারের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সাধারণ মানুষের দাবি, জেলায় যারা বোমা মজুত করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করুক পুলিশ।