
মুর্শিদাবাদ: স্বামী-স্ত্রীর ঝামেলায় বলি দেড় বছরের ছোট্ট শিশুকন্যা। নিজের মেয়েকে আছাড় মেরে খুন করার অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে। যদিও মেয়েকে মেরে শান্তি মেলেনি বাবারও। মেয়ের মৃত্যুর পর ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে বাবারও। মর্মান্তিক ঘটনা মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের দেবীদাসপুরে। একদিকে স্বামী, অপরদিকে শিশু কন্যা। একসঙ্গে দু’জনকে হারিয়ে দিশেহারা সুলেখা খাতুন।
মৃত ওই শিশুকন্যার নাম সুলাইমা খাতুন। মৃত ব্যক্তির নাম নাঈম আখতার। দু’জনেরই মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে সোমবার। জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে সামশেরগঞ্জের ভাষাইপাইকর পঞ্চায়েতের ইসলামপুর গ্রামের সুলেখা খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সামশেরগঞ্জ থানারই অন্তর্গত নাঈম আখতারের। সুলেখা খাতুনের বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, পরিবারে এক কন্যাসন্তান আসার পর থেকেই মেয়ের উপর অত্যাচার চালাতেন জামাই নাঈম এবং তাঁর পরিবারের লোকজন। এমনকী, সুলেখাকে ডিভোর্স দেওয়ার কথা জানায় নাঈম। আর তাতেই বাড়ে মনোমালিন্য।
অভিযোগ, রবিবার দুপুরে স্বামী-স্ত্রী ঝামেলা হওয়ার সময় পরিবারের অন্য লোকজনের সামনেই দেড় বছরের ছোট্ট শিশুকন্যাকে আছড়ে মারেন নাঈম। অত্যন্ত সংকটজনক অবস্থায় তড়িঘড়ি ওই শিশুকন্যাকে জঙ্গিপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাস্তাতেই মৃত্যু হয় শিশুকন্যার। অন্যদিকে মেয়ের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে পাগলের মতো এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন অভিযুক্ত বাবা নাঈম আখতার। কয়েকঘণ্টার মধ্যেই খবর আসে, শামশেরগঞ্জের জয়-কৃষ্ণপুর এলাকায় রেললাইনে কাটা পড়ে মৃত্যু হয়েছে নাঈম আখতারের। মেয়ের মৃত্যুর পর তিনি আত্মহত্যার জন্য ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
সোমবার দু’জনের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। স্বামী এবং তাঁর পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলে শিশুকন্যার মৃতদেহ নিয়ে নিজের বাবার বাড়ি চলে যান সুলেখা খাতুন। একসঙ্গে স্বামী এবং কন্যাকে হারিয়ে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন তিনি। মর্মান্তিক ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল ছড়ায় এলাকায়। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ।