মুর্শিদাবাদ: বড়ঞায় বোমাবাজিতে তৃণমূল কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যায় বড়ঞায় বোমাবাজিতে মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। আমির শেখ নামে ওই ব্যক্তি এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে ধৃতের নাম সফিরুল বাসার ও তাঁর ছেলে বিরাজ আলম। ধৃত দু’জনের বাড়ি পাপড়দহ গ্রামে । পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে বড়ঞার বিপ্রশেখর এলাকা রবিবার সন্ধ্যায় উত্তেজনা ছড়ায়। আমির শেখ মসজিদ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনার পরপরই স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতেও বোমাবাজি করে দুষ্কৃতীরা। ওই এলাকা থেকেও প্রচুর পরিমাণে বোমা উদ্ধার হয়। গ্রামে বোমা তৈরি এবং মজুত করতে সিভিক ভলেন্টিয়ার সাহায্য করতেন বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ।
পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, গ্রামের ওলিগলিতে যে বোমা বাঁধা হচ্ছে, তা পুলিশের নজরে আগেই আনা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ কোনও তোয়াক্কাই করেনি। বরং সিভিক ভলান্টিয়ারই বোমা তৈরিতে সাহায্য করতেন বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। সংবাদমাধ্যমের সামনে সেই সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম উল্লেখ করে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। এক গ্রামবাসী বলেন, “চাঁদ বলে একজন সিভিক রয়েছেন, আমাদের এলাকায় এই একজনই সিভিক রয়েছেন। চাঁদই বোমের বারুদ গ্রামে ঢোকাত। কারণ পুলিশ ওকে কখনও চেক করত না। সিভিক পুলিশই বোমা নিয়ে গিয়েছে।”
আরেক গ্রামবাসী বলেন,”অঞ্চল সভাপতি চক্রান্ত করেছেন। নিউটন খাঁ, কেরামত খাঁরা চক্রান্ত করেছে। ওঁ যখন নমাজ পড়ে বেরোচ্ছিল, তখনই মসজিদের সামনে বোমা মারা হয়।”
এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অপূর্ব সরকারের বক্তব্য, “আমরা আমাদের সহকর্মীকে হারিয়েছি। তাঁকে যারা খুন করেছে, তাদেরকে দল তৃণমূল বলে মনে করে না। পুলিশ প্রশাসনকে বলে দিয়েছি। ওপর থেকেও পুলিশ প্রশাসনকে বলে দেওয়া হয়েছে। যারা খুন করেছে, তাদেরকে সমাজবিরোধী হিসাবেই দল গণ্য করছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে, প্রশাসনের ওপর আস্থা রয়েছে।”
বিষয়টি নিয়ে ইস্যু করেছে বিজেপিও। বিজেপির সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “বোমাবাজি কোন খবর নাকি? যেদিন হবে না সেই দিন খবর। বোমা তৈরি হচ্ছে সর্বত্র। বৈধ কারখানা তৈরি করছে টিএমসির লোকেরা, পুলিশ টাকা নিচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় সাপ্লাই হচ্ছে, তৃণমূলের লোকেরাই প্রাণ হারাচ্ছে।”