মুর্শিদাবাদ: ভোট পরবর্তী হিংসা তদন্তে রাজ্য জুড়ে টহল সিবিআইয়ের (CBI)। কান্দি খানার উগ্র ভাটপাড়া গ্রামে নাবালিকা গণধর্ষণ-কাণ্ডে ফের তদন্তে এলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। মঙ্গলবার, নাবালিকার পরিজনেকর সঙ্গে কথা বলার পর তার মামার বাড়ি নবগ্রামের রায়েন্ডি গ্রামে আসেন তদন্তকারীরা। সেখান থেকে নিগৃহীতারপরিবারের সদস্য এবং দুজন প্রত্যক্ষদর্শীকে সঙ্গে নিয়ে অমৃতকুণ্ড গ্রামে ঘটনাস্থলে পৌঁছন তাঁরা। চলে ঘটনার পুনর্নিমাণ। সেখান থেকেই খুঁটিনাটি তথ্য় সংগ্রহ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
গত ৯ মে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার অনন্তপুর গ্রামে কয়েক জন দুষ্কৃতীর হাতে ধর্ষিত হয় কান্দি থানার উগ্র ভাটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এক নাবালিকা এমনই অভিযোগ ওঠে। এক বান্ধবীর সঙ্গে ওই নাবালিকা যখন সাইকেলে বাড়ি ফিরছিল, তখন কয়েক জন যুবক তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। ওই নাবালিকার বান্ধবী কোনও ক্রমে সেখান থেকে পালিয়ে প্রাণ বাঁচান। জানা গিয়েছে ওই নাবালিকা স্থানীয় স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। ধর্ষণের অভিযোগে তিন অভিযুক্তকে পূর্বেই গ্রেফতার করেছিল জেলা পুলিশ।
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় খুন ও ধর্ষণের ঘটনাগুলির তদন্তের দায়ভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সেইমতোই রাজ্য পুলিশের তদন্তকারী অফিসারদের তলব করা শুরু করেছে সিবিআই। ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে মোট ৮৪ জন তদন্তকারী অফিসার বা আইও-র মধ্যে ইন্সপেক্টর, ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার রয়েছেন। এছাড়া ২৫ জন কর্তা রয়েছেন এই দলে। জয়েন্ট ডিরেক্টর, ডিআইজি, এসপি পদমর্যাদার এই ২৫ জন অফিসার।
প্রত্যেক জোনের টিমে ২১ জন করে তদন্তকারী অফিসার বা আইও। ইতিমধ্যেই রাজ্যে পৌঁছেছেন ৪ যুগ্ম অধিকর্তারা। পৌঁছেছেন বেশিরভাগ ডিআইজি ও এসপি। রাজ্যে ১৫ টি খুন এবং ৬ টি ধর্ষণের মামলায় ২৭ অগাস্ট ১১টি এফআইআর দায়ের করেছিল সিবিআই। খুন, খুনের চেষ্টা, বেআইনি অস্ত্র রাখা, অপহরণ, অনুপ্রবেশের মতো একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআরগুলি দায়ের করা হয়। গত শনিবার আরও ১০টি এফআইআর দায়ের করা হয়। ২৯ অগস্ট আরও সাতটি এফআইআর দায়ের করা হয়। পরে আরও দুদফায় চারটি ও তিনটি এফআইআর দায়ের করা হয়। শুধু তাই নয়, ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস তদন্তে পরপর দুদিন দুটি মামলায় চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। ব্যারাকপুরে নিহত বিজেপি কর্মী জয়প্রকাশ যাদবের মৃত্যু মামলায় ও নদিয়ায় হৃদয়পুরে বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় ওই দুটি চার্জশিট পেশ করা হয়েছে।
শুক্রবার যেদিন ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার দ্বিতীয় চার্জশিট পেশ করা হল, সেদিনই সিটের চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত করা হল কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরকে। বিশেষ তদন্তকারী দল বা এই সিটে ১০ জন দক্ষ আইপিএস আধিকারিক রয়েছেন। যারা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তাঁরা মূলত সিটের সদস্য। সেই দলের চেয়ারম্যান কলকাতা হাইকোর্টের প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর। আরও পড়ুন: ফিতে দিয়ে মেপে ৫০ মিটার দূরে বিক্ষোভ মঞ্চ, বিশ্বভারতীতে খুলল অচলাবস্থার ‘তালা’