মুর্শিদাবাদ: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই দলের বিরুদ্ধে বেশ কিছু বেসুরো কথা বলতে শুরু করেছিলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। ভোটের হিংসা নিয়ে মন্তব্য করে শাসকদলের অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছেন হুমায়ুন কবীর। সেই হুমায়ুন কবীর সমর্থিত ২ নির্দল প্রার্থী জয়ী হলেন। মুর্শিদাবাদে ২ আসনে জয়ী নির্দল। মুর্শিদাবাদের সোমপাড়া পঞ্চায়েতের ঘটনা। শাসকদলের বিরুদ্ধে গিয়ে জয় ছিনিয়ে আনা, অনুভূতিটা কীরকম? প্রশ্ন করা হলে হুমায়ুন কবীর বলেন, “এখনই কোনও অনুভূতি নেই। এটা আমার নৈতিক জয়। আমি তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচিত বিধায়ক। আমার নেত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানে পঞ্চায়েতে সঠিক মনোনয়ন দেওয়ার জন্য অনুনয় বিনয় করেছিলাম। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে যোগ্য ব্যক্তিদের না টিকিট দিয়ে অনেক জায়গায় রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড না দেখে টিকিট দেওয়া হয়েছিল। তার প্রতিবাদ করে আমি অনেক জায়গাতেই মানুষের পঞ্চায়েত গড়তে চেষ্টা করেছি। আমাদের প্রতিবাদ যে সঠিক ছিল, তা প্রতিফলিত হচ্ছে।”
তবে তিনি এও বলেছেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল তৃণমূলের সার্বিকভাবে ভাল হবে। জেলা পরিষদ গঠন করবে, ২৬টা পঞ্চায়েত সমিতি গঠন করবে। তবে ২০১৮ সালে যেখানে সকল পঞ্চায়েতে সকলেই জোড়া ফুল প্রতীকে জয়ী হয়েছিলেন, এবার সেটা প্রতিফলিত হবে না। বিক্ষিপ্তভাবে কোথাও কোথাও অন্য প্রতীকেও জয় আসবে। বিরোধীদের গ্রহণযোগ্যতা কোথাও কোথাও প্রতিফলিত হবে।”
কিন্তু এই নির্দল প্রার্থী, যাঁরা জয়ী হলেন, তাঁরা কি পরে আবার প্রলোভনে পা দেবেন? সরাসরি প্রশ্নটা করা হয় হুমায়ুন কবীরকে। তিনি বলেন, “তাঁরা তো তৃণমূলের লোক। আমি তৃণমূলের বিধায়ক। তাঁরা তৃণমূলের বাইরে যাবে না। যদি না দল তাঁদের ঘাড়ধাক্কা দেয়।” উল্লেখ্য, তৃণমূল দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ইতিমধ্যেই প্রায় ৬০০ কর্মী সমর্থককে বহিষ্কার করেছে। হুমায়ুনের বক্তব্য, তাঁদের মধ্যে ভরতপুর অঞ্চলের কোনও কর্মী সমর্থক নেই। বেলডাঙা, রেজিনগরেও নেই। তিনি জানান, দলের হাতে ক্ষমতা রয়েছে। দল সিদ্ধান্ত নেবে।
গণনার দিন তিনি নিজেকে তৃণমূল বিধায়ক বলেছেন। কিন্তু নির্বাচনের দিনই দলেরই নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা গিয়েছে হুমায়ুন কবীরকে। তিনি বলেছেন, “স্বার্থান্বেষী তৃণমূল নেতৃত্ব মুর্শিদাবাদের মানুষের অধিকার খর্ব করছে। এখানে অবাধ-শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে, বলা যাবে না। এত মানুষের প্রাণহানি, হিংসার পর শান্তিপূর্ণ বললে মিথ্যাচার করা হবে।” অর্থাৎ ভোটে যে সন্ত্রাস হয়েছে তা এককথায় শাসক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে গিয়েই স্বীকার করেছেন হুমায়ন কবীর।