
মুর্শিদাবাদ: জল্পনার অবসান ঘটেছে। পশ্চিমবঙ্গে বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা (SIR) শুরুর ঘোষণা করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। রাত পোহালেই বাংলা-সহ ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হবে। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে তার সাংবিধানিক দায়িত্ব মনে করিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যের রেশ ধরে রাজ্যের শাসকদলকে কটাক্ষ করলেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
পশ্চিমবঙ্গে SIR নিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এদিন বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের কথা যদি বলি, কোনও বিরোধ নেই। সংবিধানের অন্তর্গত সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নিজের নিজের দায়িত্ব পালন করে। নির্বাচন কমিশন বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা করে নিজের দায়িত্ব পালন করছে। একইরকমভাবে রাজ্যগুলি নিজের দায়িত্ব পালন করবে।” একইসঙ্গে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার বলেন, “আপনি আইনশৃঙ্খলার কথা যে বলছেন, তা রাজ্য সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। আমার মনে হয়, নির্বাচন কমিশনের মতো প্রত্যেক রাজ্য সরকার তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবে।”
মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যের রেশ ধরে এদিন অধীর বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নিজের কোনও স্টাফ নেই। যে রাজ্যে যাবে, সেই রাজ্যের কর্মচারীদের নিতে হবে। ভোটার লিস্টে নাম তোলার জন্য লক্ষ লক্ষ কর্মীকে দরকার। সেটা রাজ্যের কাছ থেকে নিতে হবে কমিশনকে। ফলে এটা রাজ্যের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের কর্মী দেওয়া নিয়ে কোনও আপত্তিও নেই। কারণ, বিডিও, এসডিও, ডিএম রাজ্যের শাসকদলের কথা শুনে উঠে বসে। ফলে তাদের তো মাথাব্যথা থাকার কারণ নেই। মাথাব্যথা থাকার কথা আমাদের। আমরা মনে করি, পশ্চিমবঙ্গে জীবিত ভোটারকে মৃত এবং মৃত ভোটারকে জীবিত করা হয়। ভোটের দিন ভোট চুরি হয়। বুথ দখল হয়।”
নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠছে বলেও আক্রমণ শানান অধীর। তিনি বলেন, “এসআইআর নির্বাচন কমিশন করবে, এর মধ্যে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বিহারে কমিশন তা শুরু করেছে। দেশজুড়েই হবে। আমাদের আপত্তি স্পষ্ট করে জানিয়েছি। রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে আমাদের আপত্তির কথা জানিয়েছি। কোনও বৈধ ভোটারকে তাঁর ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। তার জন্য কংগ্রেসকে যত দূর আন্দোলন করতে হয়, কংগ্রেস তা করবে। বৈধ ভোটাররা যাতে নাম নথিভুক্ত করতে পারে, তার জন্য আমরা লড়াই করছি। করব।”
বিজেপি নেতারা বলছেন, এসআইআর হলে বাংলাদেশের যেসব মুসলিম রাজ্যে ঢুকে বাস করছেন, তাঁদের নাম বাদ যাবে। এই নিয়ে এদিন অধীর বলেন, “এসআইআর হলে এটা ভাবার কারণ নেই যে শুধুমাত্র একতরফা কিছু হবে। বিহারে যে এসআইআর হয়েছে, তাতে হিসাব বলছে, যারা গরিব মানুষ, দলিত মানুষ, তফসিলি নাগরিক, মোদ্দা কথা যারা পিছিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়া মানুষ, তাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।”