নবদ্বীপ: আবাসের পর এবার জল প্রকল্পেও তোলাবাজির অভিযোগ। আর কাঠগড়ায় নবদ্বীপ পুরসভা। পানীয় জলের কানেকশন দিতে প্রত্যেক বাড়ি থেকে ৩ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ। সেই টাকা দিতে না পারলে জলের কানেকশন কেটে দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি। নবদ্বীপের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তেঘড়িপাড়ার ঘটনা সামনে আসতেই তোলপাড়। স্থানীয় কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে নাকি কেটে দেওয়া হচ্ছে জলের লাইন এমনটাই অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
২০২১ সালের ১৮ ডিসেম্বর এই নবদ্বীপেই খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “ভারতের প্রায় সব জায়গায় জলের উপর ট্যাক্স নেওয়া হয়। আমি বলেছিলাম জলের আর এক নাম জীবন। তাই জলের উপর ট্যাক্স নেওয়া যাবে না। এর জন্য কেন্দ্র আমাদের অনেক প্রজেক্ট আটকে দিয়েছে। আমাকে বলল, জলের উপর ট্যাক্স না নিলে বিশ্বব্যাঙ্ক বলেছে টাকা দেবে না। আমি বললাম ওদের টাকা ওরাই ঠিক করুক কোথায় দেবে। তবে ওদের কথা শুনে আমি মানুষের উপর ট্যাক্সের বোঝা বাড়াতে পারব না। তাতে আমার হলে হবে, না হলে না হবে। আমরা নিজেরা তৈরি করব।”
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যই সার। কারণ নবদ্বীপের তৃণমূল পরিচালিত পৌরসভা সেই জলের উপরই ট্যাক্স নিচ্ছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। মমতা শীল নামে ২৪ নম্বর ওয়ার্ডবাসী বলেন, “আমাদের প্রত্যেকের থেকে তিন হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। তবে এখনও লাইন দেয়নি।” সন্ধা চন্দ নামে আরও এক ওয়ার্ডবাসী বলেন, “বলেছে তিনহাজার টাকা করে দিতে হবে। ফর্ম ফিলাপের জন্য আরও ৬০ টাকা করে দিতে হবে।” আর টাকা দিতে না পারায় ওই ওয়ার্ডের এক বাসিন্দার জলের লাইনও কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দিলীপ অধিকারী নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, “জলের লাইন বসানোর জন্য টাকা চেয়েছিল। আমি দিতে পারিনি বলে ২৩ ডিসেম্বর লাইন বসিয়ে ৩১ ডিসেম্বর খুলে নিয়ে চলে যায়।”
এ দিকে, রাজ্যের জল-স্বপ্ন প্রকল্পে তিন হাজার টাকা নেওয়ার কথা বলা হয়নি। কেন্দ্রের জল-জীবন মিশনেও উপভোক্তার থেকে টাকা নেওয়ার কথা বলা নেই। তাহলে নবদ্বীপ পুরসভা কিসের টাকা নিচ্ছে?
ওয়ার্ড কাউন্সিলর পারুল দেবনাথ যদিও বলেন, “আমাদের পুরসভায় নিয়ম আছে সেই কারণে ৩০০০ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। সবাই দিচ্ছে সেই টাকা।পানীয় জলের কানেকশন দেওয়ার জন্য নয়” যদিও, বিরোধীদের অভিযোগ দুর্নীতি। এলাকার সিপিএম নেতা সৌমেন অধিকারী বলেন, “প্রশাসকরা মানুষের কাছে যে কর সংগ্রহ করছে তা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”বিজেপি সর্ব ভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “এখন সাধারণ মানুষ ভয় কাটিয়ে বলছেন। সেই কারণে সব কিছু সামনে আসছে।” যদিও, নবদ্বীপ পুরসভার চেয়ারম্যান বিমানকৃষ্ণ সাহা টিভি৯ বাংলার সঙ্গে কোনও কথা বলতেই রাজী হননি।