Crime: বাজির আওয়াজে কেঁপে কেঁপে উঠছে শিশুরা, প্রতিবাদ করায় বৃদ্ধকে হাঁসুয়ার কোপ তৃণমূল নেতার!

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Nov 08, 2021 | 1:28 PM

Nadia: মৃত সুভাষ বিশ্বাসের পরিবার ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার গ্রামে ব্যাপক শব্দবাজি ফাটানো হলে ভয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছিল শিশুরা। কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছিল তারা।

Crime: বাজির আওয়াজে কেঁপে কেঁপে উঠছে শিশুরা, প্রতিবাদ করায় বৃদ্ধকে হাঁসুয়ার কোপ তৃণমূল নেতার!
মৃত সুভাষ বিশ্বাস, নিজস্ব চিত্র

Follow Us

নদিয়া: কালীপুজোয় আইন অমান্য করেই দেদার ফেটেছে শব্দবাজি। শব্দে কান পাতা দায়! আইনের বালাই নেই! কিন্তু সেই শব্দবাজি আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে শিশুদের কাছে। ভয়ে কান্নায় কুঁকড়ে যাচ্ছে তারা। এরই প্রতিবাদ করতে গিয়ে নৃশংসভাবে ‘খুন’  (Murder)হলেন এক বৃদ্ধ। তাও আবার শাসকদলের নেতার অঙ্গুলিহেলনে! কেন এই নাশকতা? উঠছে প্রশ্ন।  চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি হাঁসখালির চুুপরি এলাকার।

মৃত সুভাষ বিশ্বাসের পরিবার ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার গ্রামে ব্যাপক শব্দবাজি ফাটানো হলে ভয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছিল শিশুরা। কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছিল তারা। বাড়ির ছোট শিশুদের কথা ভেবে প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলেন ষাটোর্ধ্ব সুভাষ। স্পষ্ট গিয়ে জানান, বাজি ফাটালে বাচ্চারা ভয় পাচ্ছে। তাই বাজি ফাটানো বন্ধ করতে। কিন্তু, অভিযোগ সুভাষের প্রতিবেশীরা তা শোনেননি। সেই প্রতিবেশীদের তালিকায় ছিলেন খোদ তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি।

সুভাষবাবু প্রতিবাদ করতেই তৃণমূল নেতার নির্দেশে আচমকা  তাঁর দিকে ধেয়ে আসেন বেশ কিছু দুষ্কৃতী। বাড়ি থেকে তাঁকে টেনে এনে গ্রামের মন্দিরের সামনে মারধর করে বলে অভিযোগ। তারপরেই এলোপাথাড়ি তাঁকে হাঁসুয়া দিয়ে কোপ মারা হয় বলে অভিযোগ। ধারাল হাঁসুয়ার কোপে সুভাষবাবুর মাথায় ও পিঠে গভীর আঘাত লাগে। ঘটনাস্থলেই অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে যান সুভাষবাবু।

এদিকে, চিত্‍কার চেঁচামেচির আওয়াজ পেয়ে ছুটে আসেন এলাকাবাসী। রক্তাক্ত সুভাষবাবুকে কোনওরকমে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে ক্রমশ অবস্থার অবনতি হওয়ায় সুভাষবাবুকে কলকাতার নীলরতন হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। দু’দিন টানা যুদ্ধের পর অবশেষে  গত শনিবার মৃত্যু হয় সুভাষবাবুর।

সুভাষবাবুর স্ত্রীর কথায়, “নারায়ণ বিশ্বাস, বাদল বিশ্বাস ওদের গোটা পরিবার তৃণমূল করে। কালীপুজোর দিন ভীষণ বাজি ফাটাচ্ছিল। আমার নাতি কান্নাকাটি করছিল। আমার বউমা প্রথমে বাইরে গিয়ে বাজি ফাটাতে বারণ করে। কিন্তু ওরা শোনেনি। আমার স্বামী তখন বাইরে যায়। বাজি ফাটাতে বারণ করতেই ওরা চড়াও হয়। হাঁসুয়া ট্যাঙারি, ইট-পাটকেল যা পেয়েছে তাই দিয়ে মেরেছে। শেষ করে দিয়েছে।”

এদিকে, বাজি ফাটানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে খুনের মতো ঘটনায় কার্যত অস্বস্তিতে শাসক শিবির। ঘটনায়, হাঁসখালির তৃণমূল ব্লক প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, বাদল বিশ্বাস ও তাঁর পরিবার তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। তাঁদের মধ্যে বাদল তৃণমূলের বুথ সভাপতি। এই ঘটনা ঘটার পরেই বাদলকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁকে পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শাসক দলের অন্দরের খবর, ওই তৃণমূল নেতা এর আগেও একাধিক নানা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। বিভিন্ন সময়ে তাঁর পুলিশের খাতায় নাম উঠেছে। কিন্তু, শাসকদলের নেতা হওয়ায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি।

হাঁসখালি থানার পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের পরিবারের অভিযোগেল ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। যদিও, প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পেরলেও এখনও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। কেন পুলিশ গ্রেফতার করছে  না অভিযুক্তদের, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সংশ্লিষ্ট মহল। সমাজকর্মী মীরাতুন নাহার বলেন, “অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে শাসকদল এইধরনের কোনও অপরাধ দমনে সক্ষম নয়। এমনকী, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শাসক শিবিরের নেতারা এতে যুক্ত থাকেন। এই ধরনের নৃশংস হত্য়াকাণ্ড  ঘৃণ্য অপরাধ। যা কোনওভাবেই কাম্য নয়।”

আরও পড়ুন: Sand Smuggling: দামোদর থেকে টন টন বেআইনি বালি পাচার হত ওঁরই নেতৃত্বে, অবশেষে গ্রেফতার পারভেজ সিদ্দিকী

 

Next Article