কলকাতা: হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে বড় প্রমাণ এল পুলিশের হাতে। তদন্তকারী পুলিশের দাবি, গণধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। যে বাড়িতে বার্থ ডে’র পার্টি চলছিল, সেখানেই মিলেছে প্রমাণ। সেখান থেকে বীর্যের নমুনা পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও মৃত কিশোরীর এক আত্মীয়ের তরফে পুলিশের হাতে এসেছে একটা কাপড়ের টুকরো। ওই কাপড়ের টুকরোটিই এখন তদন্তের অন্যতম অস্ত্র। এর ভিত্তিতে এরই মধ্যে পুলিশ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। তবে ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া প্রমাণ এখনও ফরেনসিক ল্যাবে পাঠাতে পারেনি পুলিশ। এই ঘটনাটি প্রথম থেকেই তদন্তের ক্ষেত্রে অত্যন্ত জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছিল পুলিশের কাছে। কারণ পুলিশের হাতে কোনও প্রমাণ আসছিল না। মৃত্যুর পর ওই কিশোরীর দেহ জবরদস্তি পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ছিল না কোনও ডেথ সার্টিফিকেট, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তো দূর অস্ত। প্রাথমিকভাবে তদন্ত এগোতে বেগ পেতে হচ্ছিল পুলিশকে। পরবর্তীকালে ‘প্লেস অব অকারেন্স’-এ যেখানে পার্টি চলছিল, সেখান থেকে কিছু নমুনা পাওয়া গিয়েছে। তাতে পুলিশ মনে করছে, ওখানে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। পাশাপাশি জানা যাচ্ছে, মৃত কিশোরীর পরিবারের তরফে একটি রক্তমাখা কাপড়ের টুকরোও পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
নির্যাতিতা কিশোরীর পরিবারের বক্তব্য অনুযায়ী, গত সোমবার যখন বার্থ ডে পার্টি থেকে ফেরে, তার কিছু পর থেকে শরীরের নিম্নাঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। রক্তে ভেসে যায় তার জামা। রাতে তার মৃত্যু হয়। সেসময়েও তার পরনে ছিল রক্তমাখা ওই জামাই। পরিবারের দাবি অনুযায়ী, মাঝ রাতেই পাড়ার কিছু ছেলে এসে জবরদস্তি দেহ নিয়ে গিয়ে দাহ করে ফেলেন। ফলে পুড়ে ছাই হয় জামাকাপড়ও। কিন্তু পরিবারের এক আত্মীয়ের দাবি অনুযায়ী, সে সময় যে চাদরের ওপর শুয়ে ছিল কিশোরী, তার একটি অংশ কেটে রেখেছিলেন তিনি। সেই রক্তমাখা চাদরের টুকরোই পুলিশের হাতে তুলে দেন তিনি। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রশ্ন, হঠাৎ ওই পরিস্থিতির মধ্যেও কি কিছু আঁচ করতে পেরেছিলেন ওই আত্মীয়? কেন তিনি রক্তমাখা কাপড়ের টুকরো কেটে রাখতে যাবেন? সেটাও বিচার্য। পুলিশের কাছে এটা এখনও স্পষ্ট নয়, কারা সেদিন কিশোরীর দেহ শ্মশানে নিয়ে গিয়েছিল?
হাঁসখালি কাণ্ডে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। আজই রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে এই ঘটনার তথ্য হাতে নেবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এদিকে, বিজেপি পৃথকভাবে তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে। মঙ্গলবার রাত থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মৃত নির্যাতিতার মা ও বাবা। তাঁদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবারই নির্যাতিতার বাড়িতে যাওয়ার কথা রয়েছে সিবিআই-এর।
আরও পড়ুন: সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদে আরও ৪ সপ্তাহের স্থগিতাদেশ, স্বস্তিতে পার্থ
আরও পড়ুন: তপন কান্দু খুনে পুলিশ কি কোনওভাবে নিরঞ্জন বৈষ্ণবকেই ফাঁসানোর ছক কষছিল? এটাই মূল ফোকাস সিবিআই-এর