নদিয়া: নেতাজি ইন্ডোরের বৈঠক থেকে সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার এই বৈঠক থেকে মমতা বলেছিলেন, করিমপুর আবু তাহের দেখবেন। মহুয়া যেন তাঁর লোকসভা এলাকা কৃষ্ণনগরে নজর দেন। এরপরই মহুয়া মৈত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বিরাট লেখা পোস্ট করেন। সেখানে লেখেন, দলনেত্রীর নির্দেশমত আবু তাহের করিমপুরটা দেখবেন। তবে একইসঙ্গে মহুয়া উল্লেখ করেন, তিনি করিমপুরের জন্য কী কী করেছেন, তাঁর সঙ্গে করিমপুরের সম্পর্ক কতটা সম্পৃক্ত। যা ঘিরে প্রশ্ন ওঠে, তবে কি মহুয়ার এই পোস্ট দ্ব্যর্থক? এবার মহুয়ার বক্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায়। তাঁর বক্তব্য, মহুয়া কী করেছেন, তা সকলেই জানেন। কিন্তু সাংসদের এই পোস্ট অন্য বার্তা দিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে বিমলেন্দু সিংহ রায় বলেন, “এই রকম একটা বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। তবে একটা কথা বলি, মূলত উনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে একটা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিচ্ছেন। উনি কী উন্নয়ন করেছেন না করেছেন সেটা গোটা করিমপুরবাসী জানেন। আমার মনে হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এরকম চ্যালেঞ্জ না নিলেই উনি পারতেন।”
বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের এক সাংগঠনিক বৈঠক ছিল। সেখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রাখার সময় মহুয়া মৈত্রের নাম করে বলেন, “মহুয়া করিমপুরটা আবু তাহের দেখছেন। ওটা ওনার জায়গা। তুমি তোমার লোকসভা দেখ।” প্রসঙ্গত, মহুয়া তাঁর লোকসভার অন্তর্গত বিধানসভার বিধায়কদের পাশ কাটিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নেন বলে বহুবারই অভিযোগ উঠেছে। এদিনের সভায় মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ছিল বলেই মত রাজনীতির কারবারিদের।
এদিকে এই বৈঠকের দিন রাতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মহুয়া মৈত্র লেখেন, ‘২০১৬ থেকে ২০১৯ এই তিন বছরে সরকারের যে সর্বব্যাপী উন্নয়ন তা করিমপুরে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এই সময় প্রায় ১৪৯ কোটি টাকার উন্নয়নের কাজ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের থেকে বরাদ্দ করাই। রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ,পানীয় জল, স্থায়ী বাস স্ট্যান্ড এর মতো পরিকাঠামো উন্নয়নমূলক প্রকল্প থেকে শুরু করে লালন মঞ্চ, সদ্ভাবমণ্ডপের মতো সংস্কৃতি ও বিনোদনের ক্ষেত্র নির্মাণের মতো প্রকল্প থেকে শুরু করে করিমপুর আইটিআই, করিমপুর পান্নাদেবী কলেজের মানোন্নয়নের মতো শিক্ষামূলক প্রকল্প থেকে শুরু করে নানা ক্ষেত্রে সরকারের উন্নয়নের মানচিত্রে করিমপুরকে সামিল করার চেষ্টা করেছি এবং আপনারা তা চাক্ষুষও করেছেন।’
একইসঙ্গে মহুয়া মৈত্র লেখেন, ‘করিমপুরের একজন সাধারণ ভোটার হিসাবে বা আপনাদের পূর্বতন বিধায়ক হিসাবে প্রত্যেক করিমপুরবাসীর সঙ্গে আমার নাড়ির টান ছিল,আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। কিন্তু নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলের সর্বোচ্চ নেত্রীর কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিধানসভাগুলিতে আরও বেশি সময় দেওয়ার নির্দেশের কারণে আমাকে ওই অঞ্চলেগুলোতে আরও বেশি সময় দিতে হবে। তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ আগামিদিনে উন্নয়নমূলক প্রকল্প সংক্রান্ত কোনও বিষয়ে প্রয়োজনে মাননীয় সাংসদ জনাব আবু তাহের খান সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আমি করিমপুরের ভোটার ও অধিবাসী হিসেবে আমার করিমপুরের বাসস্থানেই থাকবো।’